২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষদিকে চীনে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাস মহামারির রুপ নিয়ে গত এক বছরের বেশি সময়ে পঁচিশ লাখ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের হালনাগাদ হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশ সময় শুক্রবার দুপুর ১টা পর্যন্ত করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২৫ লাখ ৭ হাজার ৬২৪।  

চীনে শনাক্ত হওয়ার পর এ পর্যন্ত ১১ কোটি ৩০ লাখের বেশি মানুষের দেহে সংক্রমণ ঘটানো করোনায় প্রথম মৃত্যু হয়েছিল ২০২০ সালের ১১ জানুয়ারি। গত ১৫ জানুয়ারি বিশ্বে করোনার সংক্রমণে মৃতের সংখ্যা ২০ লাখ ছাড়ায়। টিকাদান কর্মসূচি শুরু হলেও ভাইরাসটি যে এখনো অবাধে তার বিস্তার ঘটাচ্ছে তা পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট।  

সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ইউরোপ ৮ লাখ ৪২ হাজার ৮৯৪ মৃত্যু নিয়ে প্রাণহানিতে রয়েছে শীর্ষে। এরপর যথাক্রমে ৬ লাখ ৬৭ হাজার ৯৭২ নিয়ে দ্বিতীয় সর্বাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে। অপরদিকে উত্তর আমেরিকার দুই দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় প্রাণহানি ৫ লাখ ২৮ হাজারের বেশি। 

বার্তা সংস্থা এএফপি জানাচ্ছে, বিশ্বে করোনায় এখন পর্যন্ত যত মানুষের মৃত্যু হয়েছে এরমধ্যে প্রায় অর্ধেকই পাঁচ দেশে। শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ৫ লাখ ৮ হাজার ৩০৭ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনা। এরপর যথাক্রমে রয়েছে ব্রাজিল (২,৫১,৪৯৮) মেক্সিকো (১,৮৩,৬৯২), ভারত (১,৫৬,৮২৫) এবং যুক্তরাজ্য (১,২২,৩০৩)।  

সরকারি হিসাবের ওপর ভিত্তি করে এই পরিসংখ্যান তৈরি করা হয়েছে। তবে বিভিন্ন দেশে পরিসংখ্যান সংস্থাগুলো দেওয়া পুনর্মূল্যায়িত হিসাব তালিকাভূক্ত হয়নি। যেমনটা ঘটেছে রাশিয়া, স্পেন ও ব্রাজিলের ক্ষেত্রে।    

২০২০ সালের জানুয়ারিতে প্রথম মৃত্যুর পর মাত্র নয় মাসের মধ্যে গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর করোনায় প্রাণহানি দশ লাখ ছাড়িয়েছিল। এরপর মাত্র চার মাসের মধ্যে গত ১৫ জানুয়ারি প্রাণহানির সংখ্যা বিশ লাখ ছাড়িয়েছিল।  

তবে গত জানুয়ারির শেষদিক থেকে বিশ্বজুড়ে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমছে। গত সপ্তাহে মোট প্রাণহানি ৬৬ হাজার ৮০০ অথবা দৈনিক গড়ে ৯ হাজার ৫০০ জন। গত ২০ থেকে ২৬ জানুয়ারি সপ্তাহের তুলনায় যা অনেক কম। ওই সপ্তাহে মোট প্রাণহানি ছিল ১ লাখ ১ হাজার ৪০০ অথবা দৈনিক গড়ে ১৪ হাজার ৫০০ জন।    

গত সপ্তাহে করোনায় মোট মৃত্যুর এক-তৃতীয়াংশ ইউরোপের ৫২ দেশ ও অঞ্চলে। তবে তার আগের সপ্তাহের তুলনায় অবশ্য এই সংখ্যাটা ১৪ শতাংশে কমে গড়ে দৈনিক প্রাণহানির সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৪০০ জন।  

যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মতো দেশে মৃত্যুহার ইউরোপ ও আফ্রিকার চেয়েও দ্রুতগতিতে কমেছে। লাতিন আমেরিকা এবং ক্যারিবীয় অঞ্চলেও মৃত্যুহার কমেছে। প্রতি দশ লাখে মৃত্যুহারে এখনো শীর্ষে রয়েছে ব্রাজিলে। সর্বোচ্চ মৃত্যুহারের দিক থেকে এরপরই যথাক্রমে রয়েছে ইউরোপের চেক রিপাবলিক, স্লোভেনিয়া, ব্রিটেন এবং ইতালি। 

এএস