গুজরাটে সেতু দুর্ঘটনা, পরিবারের ১২ সদস্যকে হারালেন ক্ষমতাসীন এমপি
ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটের একটি ঝুলন্ত সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৪১ জন। রোববার (৩০ অক্টোবর) রাজ্যটির মোরবি জেলায় মাচ্ছু নদীতে নির্মিত প্রায় দেড়শ বছরের পুরোনো ওই সেতু ভেঙে পড়লে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে।
আর এই মর্মান্তিক ঘটনায় মারা গেছেন রাজ্যটির ক্ষমতাসীন দল বিজেপির এক সংসদ সদস্যের পরিবারের ১২ জন সদস্য। সোমবার (৩১ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআই।
বিজ্ঞাপন
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভয়াবহ সেতু দুর্ঘটনায় পরিবারের ১২ জন সদস্যকে হারানো ওই বিজেপি এমপির নাম মোহনভাই কল্যাণজি কুন্দারিয়ার। তিনি রাজ্যটির রাজকোটের বিজেপি দলীয় সংসদ সদস্য।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, রোববারের সেতু দুর্ঘটনায় রাজকোটের বিজেপি এমপি মোহনভাই কল্যাণজি কুন্দারিয়ারের পরিবারের ১২ জন সদস্য মারা গেছেন। সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডেকে বিজেপির এই এমপি জানিয়েছেন, ‘রোববারের দুর্ঘটনায় আমি আমার পরিবারের ১২ সদস্যকে হারিয়েছি। তাদের মধ্যে রয়েছে ৫ জন শিশু। আমার বোনের পরিবারের সদস্যদের এই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে।’
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেছেন, ‘এনডিআরএফ, এসডিআরএফ ও স্থানীয় প্রশাসন উদ্ধারকাজ ও তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে। উদ্ধারকারী নৌকা ঘটনাস্থলে রয়েছে। কিছু মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং বাকিদের মাচ্ছু নদী থেকে উদ্ধারের কাজ চলছে।’
সংবাদমাধ্যম বলছে, গুজরাট রাজ্যের রাজধানী আহমেদাবাদ থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই ঝুলন্ত সেতুটি রোববার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে ভেঙে পড়ে। ঘটনায় সময় সেতুতে প্রায় ৫০০ জন লোক ছট পূজার কিছু রীতি পালনের জন্য জড়ো হয়েছিলেন।
ঝুলন্ত এই সেতুটি ভেঙে পড়ার ঘটনায় এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ১৪১ জনে। এছাড়া আহতও হয়েছেন অনেকে। এছাড়া এখন পর্যন্ত প্রায় ১৭৭ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং আরও কয়েকজনের অনুসন্ধান চলছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
প্রায় ১৫০ বছর আগে নির্মিত মোরবির ঝুলন্ত এই সেতু ভারতের ঐতিহাসিক স্থাপনার তালিকায়ও রয়েছে। গুজরাটের স্থানীয় নববর্ষ উপলক্ষে মেরামতের পর গত চারদিন আগে (২৬ অক্টোবর) সেতুটি পুনরায় খুলে দেওয়া হয়।
মোরবি পৌরসভার কর্মকর্তারা বলেছেন, যথাযথ ফিটনেস সার্টিফিকেট ছাড়াই সেতুটি পুনরায় খুলে দেওয়া হয়েছিল। স্থানীয় একটি বেসরকারি ট্রাস্ট সেতুটির মেরামত ও সংস্কার কাজ করেছে। কিন্তু রাজ্য সরকারের ফিটনেস সার্টিফিকেট ছাড়াই ওই ট্রাস্ট সেতুটি খুলে দেয়।
এদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ২ লাখ এবং আহতদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া রাজ্য সরকারও নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে চার লাখ এবং আহতদের পরিবারকে ৫০ হাজার রুপি করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
টিএম