ভিডিও: গুজরাটের ঝুলন্ত সেতু ধসের ভয়ঙ্কর মুহূর্ত
মোরবি জেলায় ব্রিটিশ আমলে নির্মিত ঝুলন্ত সেই সেতু ভেঙে পড়ার ঠিক আগের ভয়ঙ্কর একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে
ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটের মোরবি জেলায় ব্রিটিশ আমলে নির্মিত ঝুলন্ত সেই সেতু ভেঙে পড়ার ঠিক আগের ভয়ঙ্কর একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসা সেই ভিডিওতে দেখা যায়, ভেঙে পড়ার আগ মুহূর্তে সেতুতে শত শত মানুষ হেঁটে বেড়াচ্ছেন, গল্প করছেন আবার কেউ কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে দোলাচ্ছিলেন। রোববার সন্ধ্যায় সেতুটি নদীতে ভেঙে পড়ার পর এখন পর্যন্ত অন্তত ১৪২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
গুজরাটের মাচ্ছু নদীতে এই সেতু হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ার ঠিক আগ মুহূর্তের দৃশ্য ধরা পড়েছে সিসিটিভি ফুটেজে। এতে দেখা যায়, রোববার সন্ধ্যা ৬টা ৩২মিনিটের দিকে সেতুটি ভেঙে পড়ার সময় লোকজন দু’পাশের টানা কেবল ধরে টানাটানি করছেন, দোল খাচ্ছেন। তাদের কেউ কেউ সেতুতে লাথিও মারেন।
বিজ্ঞাপন
মানুষে ঠাসা সেতুতে অনেকে মোবাইল ফোন দিয়ে ছবি তোলেন। এ সময় অন্যান্য লোকজন সেতুটি দোলানোর চেষ্টা করেন। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে টানা কেবলগুলো একের পর এক ছিঁড়ে যায় এবং সেতুটি হুড়মুড়িয়ে মাঝ বরাবর ভেঙে নদীতে পড়ে যায়। সেতুটির মাঝে ভেঙে গেলেও এর একপাশের পদচারীদের হাঁটার অংশ ঝুলে ছিল এবং অন্য প্রান্ত ছিল মাঝ আকাশে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছে, কেবল ছিঁড়ে যাওয়ার সাথে সাথে লোকজন একে অপরের ওপর পড়ে যান। নদীর তীর থেকে ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যায়, সেতুটি ভেঙে যাওয়ার পর অনেকে কেবল ধরে ওপরে উঠে আসার চেষ্টা করছেন। এ সময় কিছু লোককে সাঁতার কেটে তীরে ভিড়তেও দেখা যায়।
বিজ্ঞাপন
দুর্ঘটনার সময় সেতুটিতে পাঁচ শতাধিক মানুষ ছিলেন বলে স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে জানানো হচ্ছে। মোরবিতে ক্ষমতাসীন বিজেপির কাউন্সিলর জয়রাজ সিং জাদেজা বলেন, রোববার ৪০০ থেকে ৫০০ টিকেট বিক্রি করা হয়েছিল। যে কারণে সেতুটি লোকজনে ঠাসা ছিল এবং ধসে পড়ে।
সাত মাস ধরে মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শেষে গত ২৬ অক্টোবর দেড়শ বছরের পুরোনো সেতুটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। মোরবি পৌর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সেতুটির মেরামত এবং রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল দেশটির বেসরকারি কোম্পানি অজান্তা ম্যানুফ্যাকচারার্সকে।
এই কোম্পানি কর্তৃপক্ষের যথাযথ ফিটনেস সার্টিফিকেট ছাড়াই মেরামত শেষে পূর্বনির্ধারিত সময়ের আগেই সেতুটি খুলে দিয়েছে বলে পৌর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
চুক্তিতে বলা হয়েছিল, সেতুটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার আগে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আট থেকে ১২ মাস পর্যন্ত বন্ধ রাখতে হবে। কিন্তু কোম্পানি কর্তৃপক্ষ চুক্তির এই শর্ত লঙ্ঘন করে সেতুটি আগেই খুলে দিয়েছিল।
মোরবি পৌরসভার প্রধান কর্মকর্তা সন্দীপসিংহ জালা বলেন, কর্তৃপক্ষকে সেতুটি পুনরায় চালু করার বিষয়ে জানায়নি ওই কোম্পানি।
এসএস