সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় ভেঙে পড়েছে সেতু, আদালতকে বললেন আটক ম্যানেজার
ধসে পড়া সেতুতে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা -ফাইল ছবি
ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটের মোরবি জেলার মাচ্ছু নদীতে ঝুলন্ত সেতু ধসে পড়ার ঘটনায় আটক এক অভিযুক্ত বলেছেন, ‘ঈশ্বরের ইচ্ছায়’ এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার গুজরাটের এক আদালতে এই মন্তব্য করেছেন সেতুটির মেরামতকারী সংস্থার ব্যবস্থাপক দীপক পারেক।
বিজ্ঞাপন
গত রোববার গুজরাটে ভয়াবহ এই সেতুধসের ঘটনায় অন্তত ১৩৫ জনের প্রাণহানি ঘটে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও কয়েক ডজন মানুষ।
দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, ধসে পড়া সেতুটির সংস্কার কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ওরেভা কোম্পানির ব্যবস্থাপক দীপক। প্রায় দেড়শ বছরের পুরোনো সেতুটি রক্ষণাবেক্ষণ ও দেখভালের দায়িত্ব ছিল এই কোম্পানির ওপর।
বিজ্ঞাপন
রোববার সেতু ধসে পড়ার পর ৯ জনকে আটক করা হয়। দীপক পারেক তাদের একজন। আদালতে তোলা হলে অভিযুক্ত দীপক পারেক প্রধান বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট এমজে খানকে বলেন, এটা ঈশ্বরের ইচ্ছা ছিল। যে কারণে এমন দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটেছে।
মোরবি জেলা উপ-পুলিশ সুপার পিএ ঝালা আদালতকে বলেছেন, সেতুর কেবলে জং ধরেছিল। কিন্তু সংস্কারকাজ চালানোর সময় কেবলটি পরিবর্তন করা হয়নি। গত ২৬ অক্টোবর সরকারের অনুমতি ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই সেতুটি খুলে দেওয়া হয়। পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘রক্ষণাবেক্ষণের অংশ হিসেবে শুধুমাত্র সেতুর প্লাটফর্ম পরিবর্তন করা হয়েছিল। সেতুটি কেবলের ওপর ছিল। এটিতে কোনও তেল বা গ্রিজ দেওয়া হয়নি। এখান থেকেই সেতুটি ধসে পড়ে। কেবলে জং ছিল। কেবল পরিবর্তন করা হলে এ ধরনের ঘটনা ঘটত না।’
আদালতের একজন কৌঁসুলি বিচারককে বলেছেন, ‘যে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সেতুটির সংস্কারকাজ পরিচালনা করেছিল তাদের কোনও সরকারি অবকাঠামো ঠিক করার যোগ্যতা ছিল না।’
কিন্তু তা সত্ত্বেও কোম্পানিকে ২০০৭ ও ২০১২ সালে সেতুটি সংস্কার করার কাজ দেওয়া হয়েছিল, যোগ করেন তিনি।
সংস্কারকাজ চালানো ওরেভা কোম্পানির ব্যবস্থাপক জয় সুখভাই প্যাটেল। তিনি প্রকাশ্যে বলেছিলেন, সেতুটি আট-দশ বছর চলবে। তবে দুর্ঘটনার পর তাকে আর দেখা যায়নি।
স্থানীয়রা বলেছেন, সেতুটি নতুন করে খুলে দেওয়ার সময় জয় সুখভাই ও তার পরিবারকে সর্বশেষ দেখা যায়। গুজরাটের ঝুলন্ত ওই সেতু ধসের পর আহমেদাবাদে অবস্থিত ওরেভা কোম্পানির খামারবাড়ি বন্ধ ও পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে।
পুলিশের এফআইআরে ওরেভার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা অথবা মোরবি পৌরসভার কোনও কর্মকর্তা, যারা ওরেভাকে কাজটি দিয়েছিলেন তাদের নাম উল্লেখ করা হয়নি। দীপক পারেক, ওরেভা গ্রুপের আরেকজন ব্যবস্থাপক এবং আরও দু’জন সাব কন্ট্রাক্টরকে শনিবার পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। নিরাপত্তারক্ষীসহ আটক আরও পাঁচজন আদালতের জিম্মায় রয়েছেন।
সূত্র: এনডিটিভি
এমটিআই/এসএস