যে চিকিৎসায় সুস্থ হলেন ৪১১ দিন ধরে করোনায় আক্রান্ত রোগী
প্রতীকী ছবি
একটানা ৪১১ দিন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত থাকার পর সুস্থ হয়েছেন এক ব্যক্তি। ব্রিটিশ গবেষকরা শুক্রবার (৪ নভেম্বর) এই তথ্য সামনে আনেন। তারা জানান, ক্রমাগত ৪১১ দিন ধরে করোনায় সংক্রমিত থাকা এক ব্যক্তিকে সুস্থ করে তুলেছেন তারা।
মূলত ওই রোগীর নির্দিষ্ট ভাইরাসের জেনেটিক কোড বিশ্লেষণ করার মাধ্যমে তার জন্য সঠিক চিকিৎসা খুঁজে বের করা হয়। পরে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার পরই করোনা থেকে মুক্ত হন ওই রোগী। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
বিজ্ঞাপন
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্রমাগত কোভিড সংক্রমণ মূলত দীর্ঘ কোভিড বা রোগের পুনরাবৃত্তির থেকে আলাদা। একটানা করোনায় আক্রান্ত হয়ে থাকার মতো ঘটনা ইতোমধ্যেই দুর্বল রোগ প্রতিরোধক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তিসহ অল্প সংখ্যক রোগীর মধ্যে দেখা গেছে।
সংবাদের শিরোনাম হওয়া ব্রিটেনের এই রোগী কিডনি প্রতিস্থাপনের পর ২০২০ সালের ডিসেম্বরে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং টানা ১৪ মাস ধরে ভাইরাসটিতে সংক্রমিত ছিলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
চিকিৎসকদের মতে, করোনা মহামারির মধ্যে একই ব্যক্তির শরীরে একাধিক বার কোভিডের সংক্রমণ ঘটেছে, এমন বহু উদাহরণ রয়েছে। তবে দীর্ঘ দিন ধরে একটানা এই ভাইরাসে আক্রান্ত থাকার ঘটনা কমই ঘটেছে। তাদের মধ্যে ব্রিটেনের এই ৫৯ বছর বয়সী এই রোগীর দৃষ্টান্ত অন্যতম।
গাইজ অ্যান্ড সেন্ট টমাসের এনএইচএস ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট-এর চিকিৎসক লুক স্নেলের মতে, এ ধরনের রোগীরা মাসের পর মাস অথবা বছরজুড়ে করোনায় আক্রান্ত থাকেন। এ ক্ষেত্রে, কিডনি প্রতিস্থাপনের পর ওই ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অন্যদের চেয়ে তুলনামূলক ভাবে কমে যায়। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে কোভিডে আক্রান্ত হন তিনি। সেই সময় থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত বার বার তার কোভিড পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, প্রায় ১৪ মাস ধরে ভাইরাসে আক্রান্ত ওই ব্যক্তি কীভাবে সংক্রমিত হলেন, তা জানার চেষ্টা করেন চিকিৎসকরা। তিনি একাধিক বার এই ভাইরাসের সংস্পর্শে এসেছিলেন নাকি একবারই আক্রান্ত হয়েছিলেন, তা খতিয়ে দেখেন গবেষকেরা। সে জন্য ওই রোগীর র্যাপিড জেনেটিক অ্যানালাইসিস-সহ ন্যানোপোর সিকোয়েন্সিং প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হয়েছিল।
পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দেখা যায়, করোনাভাইরাসের বি.১ ধরনে আক্রান্ত ওই ব্যক্তি। এরপর তাকে সুস্থ করে তুলতে গবেষকেরা ওই ব্যক্তিকে কাসিরিভিম্যাব এবং ইমডেভিম্যাব মোনোক্লোনাল অ্যান্টিবডির যৌথ চিকিৎসা সেবা দেন। আর তাতেই সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি।
তবে এএফপি বলছে, অন্যান্য অ্যান্টিবডি চিকিৎসার মতো, করোনার বিরুদ্ধে এই চিকিৎসাটি এখন আর ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় না। কারণ এটি ওমিক্রনের মতো করোনার নতুন ধরনগুলোর বিরুদ্ধে অকার্যকর।
অবশ্য এই চিকিৎসা পদ্ধতি সফলভাবে ওই ব্যক্তিকে সুস্থ করে তুলতে সহায়তা করেছে, কারণ তিনি করোনা মহামারির শুরুর দিকে বিদ্যমান ভাইরাসের একটি ধরনে আক্রান্ত হয়েছিলেন।
টিএম