মিয়ানমারের জান্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি
সামরিক অভ্যুত্থানের প্রতিবাদ এবং গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনরত মানুষের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করায় দেশটির জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসংঘের বিশেষ দূত। শুক্রবার (৫ মার্চ) জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কাছে এই দাবি জানান তিনি।
গত ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সু চির সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। এ অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশটির সর্বময় ক্ষমতা কুক্ষিগত করেন সেনাপ্রধান জেনারেল মিং অং হ্লাইং। এসময় স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি ও প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টকে গ্রেফতার করা হয়। অভ্যুত্থানের পর থেকে এর বিরুদ্ধে রাজপথে বিক্ষোভ করে আসছেন হাজারও মানুষ।
বিজ্ঞাপন
বিক্ষোভের প্রথম পর্যায়ে সামরিক বাহিনী দৃশ্যত সংযমের পরিচয় দিলেও গতমাসের শেষদিক থেকে ক্রমশ অসহিষ্ণু হয়ে উঠতে থাকে। আন্দোলন দমনে রাবার বুলেট-জলকামান-টিয়ারশেলের পরিবর্তে প্রাণঘাতী স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ব্যবহার করা শুরু করে মিয়ানমারের আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
বিজ্ঞাপন
জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী, জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ৫০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে গত বুধবারই নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয় ৩৮ জন বিক্ষোভকারী। এরপরও বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নেমে আসছেন এবং গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চির মুক্তিসহ গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা ফিরয়ে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, শুক্রবার জাতিসংঘের ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে মিয়ানমারে নিযুক্ত সংস্থাটির বিশেষ দূত ক্রিস্টিন স্ক্যামার বার্গেনার বলেন, ‘বার্মার সামরিক বাহিনীকে আমরা আর কতো ছাড় দেবো? সামরিক বাহিনীকে কড়া ও পরিষ্কার বার্তা দেওয়ার মাধ্যমে গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফল এবং মিয়ানমারের জনগণের পাশে নিরাপত্তা পরিষদকে শক্ত ভাবে দাঁড়াতে হবে; এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
অবশ্য এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির জান্তা সরকারের মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় রয়টার্স। তবে বার্মিজ সামরিক বাহিনীর দাবি, বিক্ষোভ দমনে তারা সংযমের পরিচয় দিয়েছে। একইসঙ্গে কাউকে দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে দেওয়া হবে না বলেও মন্তব্য করেছে তারা।
মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে এ পর্যন্ত অর্ধশতাধিক আন্দোলনকারী নিহত হয়েছেন। সর্বশেষ শুক্রবার দেশটির মান্দালয় শহরে পুলিশের গুলিতে আরও এক বিক্ষোভকারী নিহত হন।
সূত্র: রয়টার্স
টিএম