কলকাতায় রেলের বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডে ৭ জনের মৃত্যু
পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার স্ট্র্যান্ড রোডে রেলের নিউ কয়লাঘাট বিল্ডিংয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে চারজন দমকল কর্মী, একজন আরপিএফ কর্মী ও হেয়ার স্ট্রিট থানা পুলিশের এক সহকারী উপপরিদর্শক রয়েছেন। আরও একজনের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু সোমবার (৮ মার্চ) রাত ১১টায় বলেন, ‘১৩ তলা থেকে বেরোতে গিয়ে চারজন দমকলকর্মী, হেয়ার স্ট্রিট থানার এক এএসআই এবং একজন আরপিএফ কর্মী মারা গেছেন। একজনকে এখনও শনাক্ত করা যায়নি।’
বিজ্ঞাপন
সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে আগুন লাগে ওই ভবনে। ১৪তলা ভবনটির ১৩তলায় প্রথম আগুন লাগে বলে জানিয়েছে দমকল সূত্র। অল্প সময়ের মধ্যেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে ভবনের ১২তলায়। প্রায় ৫ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
পুলিশ ও দমকল সূত্র জানিয়েছে, প্রথমে আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসার পর ১৩তলায় পৌঁছানোর চেষ্টা করেছিলেন কয়েকজন দমকল কর্মী। ১২তলায় পৌঁছে তারা লিফট থেকে বেরোনোর চেষ্টা করেন। বেরোতে না পেরে ফিরে আসার চেষ্টা করেন; কিন্তু নিচেও নামতে পারেননি। ফলে লিফটের মধ্যেই তাদের মৃত্যু হয়।
বিজ্ঞাপন
পরে জানা গেছে, লিফট বিদ্যুৎস্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তার জেরেই ঝলসে মৃত্যু হয়েছে তাদের। এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ওই লিফট থেকে পাঁচটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
আগুন লাগার খবর পেয়ে প্রথমেই দমকলের বেশ কয়েকটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। কিন্তু এত উঁচুতে আগুন লাগায় তা নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হয় দমকল কর্মীদের। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে হাইড্রোলিক ল্যাডার নিয়ে যাওয়া হয়। আশপাশের ভবনে যাতে আগুন ছড়িয়ে না পড়ে তার চেষ্টা করেন দমকল কর্মীরা।
নিরাপত্তার কারণে ওই ভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। ভবনের কাছে আইসিইউ সুবিধাযুক্ত বেশ কয়েকটি অ্যাম্বুল্যান্স তৈরি রাখা হয়। উদ্ধার কাজে আলোর ব্যবস্থার জন্য কয়েকটি জেনারেটর আনা হয়।
অগ্নিকাণ্ডের জেরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন ওই এলাকার মানুষ। স্ট্র্যান্ড রোডের একাংশ বেশ কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান প্রশাসন এবং পুলিশ কর্মকর্তারা।
ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডে রেলের সার্ভার রুম সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়েছে। ফলে উত্তর-পূর্ব ভারতে রেলের বুকিং ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
সুজিত বসু জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে জন্য ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন।
এদিকে আগুন রাত সোয়া ১১টা নাগাদ ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, ক্ষতিপূরণ ছাড়াও নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারের একজনকে সরকারি চাকরি দেওয়া হবে।
সূত্র: এনডিটিভি, আনন্দবাজার
এসএমডব্লিউ