যে দেশটির সব মানুষের বয়স কমে যাচ্ছে
বাঙালি শিশুসাহিত্যিক সুকুমার রায়ের ‘হ-য-ব-র-ল’ নিশ্চই পড়েছেন। তার সেই রম্য রচনায় বয়স নিয়ে লিখেছিলেন, বয়স কি শুধুই বাড়বে? তা কি হয় নাকি? বয়স বাড়বে। তারপর এক সময় আবার উল্টো দিকে চলবে। মানে, কমবে। কমতে কমতে যখন দশে আসবে, তখন আবার বাড়তে থাকবে!
পুরোপুরি সুকুমারে সেই রম্য রচনার মতো না ঘটলেও তেমনটাই হতে যাচ্ছে। একটি দেশের সব মানুষের বয়স এবার এক-দুই বছর করে কমে যাবে। এমনই আজব ঘটনা ঘটতে চলেছে দক্ষিণ কোরিয়ায়।
বিজ্ঞাপন
কী ঘটতে চলেছে দক্ষিণ কোরিয়ায়? সেখানে বয়স এক-দুই বছর করে কমে যেতে চলেছে এবং সেটি গোটা দেশের সব মানুষের। আকর্ষণীয় বিষয় হলো এই উদ্যোগটি নেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।
কী ধরনের উদ্যোগ, কীভাবেই বা বয়স কমতে পারে? এসবের উত্তর জানা আগে জানতে হবে দক্ষিণ কোরিয়ায় কীভাবে বয়সের হিসাব করা হয়।
বিজ্ঞাপন
গোটা বিশ্বে যেভাবে বয়সের হিসাব করা হয়, দক্ষিণ কোরিয়া তার বিপরীতে। এখানে জন্মের সময়ে কারও বয়স ‘০’ বলে ধরা হয় না। এই দেশে গর্ভাবস্থা থেকেই বয়স গণনা শুরু হয়ে যায়। অর্থাৎ জন্মের সময়ে যে কারও বয়স ধরা হয় ৯-১০ মাস। মা যখন গর্ভধারণ করেন, সেই সময় থেকেই শুরু হয়ে যায় সন্তানের বয়সের হিসাব।
এবার এই পদ্ধতিতেই পরিবর্তন করতে যাচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সারা পৃথিবীতে যেভাবে বয়স নির্ণয় করা হয়, গণনা হয়— এবার থেকে সেভাবেই দক্ষিণ কোরিয়াতেও বয়স গোনা হবে। হালে এ বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার পক্ষ থেকে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটির ১০ সদস্যের মধ্যে ৮ জনই সারা বিশ্বে যে পদ্ধতিতে বয়সের হিসাব হয়, তাদের দেশেও সেই পদ্ধতি আরোপের পক্ষে ভোট দিয়েছেন।
এর ফলে ২০২৩ সালেই সারা বিশ্বের মতো করে বয়স গণনা শুরু হয়ে যাবে দক্ষিণ কোরিয়াতে। এই সুযোগে দেশের সব মানুষে বয়স এক থেকে দুই বছরের মতো কমে যাবে। দেশের বেশির নাগরিকরাও এই সিদ্ধান্তের পক্ষে মতো জানিয়েছেন।
৮০ শতাংশেরও বেশি নাগরিক বলেছেন, আগামী দিনের জন্য এটি সঠিক সিদ্ধান্ত হতে চলেছে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। না হলে বাকি দুনিয়ার সঙ্গে তাল মেলানো মুশকিল হচ্ছিল তাদের পক্ষে।
এসএম