সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় জীবিতদের খোঁজা ‘শেষ’
ছবি : ওয়াশিংটন পোস্ট
সিরিয়ার স্বেচ্ছাসেবী বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনী ও দেশটির বৃহত্তম দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দল হোয়াইট হেলমেট দেশটির বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় জীবিতদের অনুসন্ধান তৎপরতার সমাপ্তি ঘোষণা করেছে। শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে হোয়াইট হেলমেট কেন্দ্রীয় কমান্ড।
শুক্রবার এ সম্পর্কিত এক বিবৃতিতে হোয়াইট হেলমেটের কেন্দ্রীয় কমান্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আমরা (স্থানীয় সময়) সোমবার থেকে এ পর্যন্ত সিরিয়ার উত্তর ও উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে অনুসন্ধান চালিয়ে মোট ২ হাজার ১৬৬ জনের মরদেহ এবং ২ হাজার ৯৫০ জনকে জীবিত ও আহত অবস্থায় উদ্ধার করতে পেরেছি।’
বিজ্ঞাপন
৬ ফেব্রুয়ারি সোমবার স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তুরস্ক ও তার প্রতিবেশী দেশ সিরিয়া। ওই ভূমিকম্পের ১৫ মিনিট পর ৬ দশমিক ৭ মাত্রার আরও একটি বড় ভূমিকম্প এবং পরে অনেকগুলো আফটারশক হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের তাৎক্ষণিক এক বিবৃতিতে বলা হয়, তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় কাহরামানমারাশ প্রদেশের গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে ভূপৃষ্ঠের ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার গভীরে ছিল ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল।
বিজ্ঞাপন
ভূমিকম্পে তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চল এবং সীমান্তের অপর প্রান্তের দেশ সিরিয়ার উত্তর ও উত্তরপশ্চিমাঞ্চল কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত ৫ দিনে দুই দেশের ভূমিকম্প উপদ্রুত বিভিন্ন এলকা থেখে মোট ২৩ হাজার ৮৩১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এই ২৩ হাজার ৮৩১ জনের মধ্যে তুরস্ক থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ২০ হাজার ৩১৮ জনের মরদেহ এবং সিরিয়া থেকে উদ্ধারকৃত মরদেহের সংখ্যা ৩ হাজার ৫১৩ জন। ভূমিকম্পের পরপরই সিরিয়ার উপদ্রুত এলাকাগুলোতে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে হোয়াইট হেলমেট।
শুক্রবারের বিবৃতিতে হোয়াইট হেলমেটের কেন্দ্রীয় কমান্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘ভূমিকম্পের পর গত ১০৮ ঘণ্টায় আমরা দেশের উত্তর ও উত্তরপশ্চিমাঞ্চলের ৪০টিরও বেশি শহর ও গ্রামে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়েছি। উপদ্রুত এসব শহর ও গ্রামে ৪১৯টি আবাসিক ভবন সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে, আংশিকভাবে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে ১ হাজার ৪৮১টি ভবন।’
‘আমরা যথাসাধ্য তৎপরতা চালিয়েছি; কিন্তু ভয়াবহ এই দুর্যোগের পর আজ পঞ্চম দিন চলছে। বৈরী আবহাওয়া এবং খাদ্য-পানীয়ের অভাবে বিভিন্ন ভবনের ধ্বসাবশেষের নিচে আটকা পড়াদে কেউ আর বেঁচে নেই বলেই আমাদের বিশ্বাস।’
‘এ কারণে আমরা এখন থেকে ভবনের নিচে চাপা পড়া মৃতদের উদ্ধারে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
প্রায় এক দশক ধরে গৃহযুদ্ধ চলছে সিরিয়ায়। দেশটির উত্তরাঞ্চলের বিশাল এলাকায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের নেতৃত্বাধীন সরকারের কার্যত কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। সরকারবিরোধী বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী গত কয়েক বছর ধরে উত্তর সিরিয়ার বিভিন্ন গ্রাম ও শহর নিয়ন্ত্রণ করছে। ভূমিকম্পে যেসব গ্রাম ও শহরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সেসবের অধিকাংশই সরকারবিরোধীদের নিয়ন্ত্রণাধীন।