প্রতীকী ছবি

আফগানিস্তানের এক শরণার্থীর ফোন তল্লাশি করার অধিকার অভিবাসন কর্তৃপক্ষের ছিল না বলে রায় দিয়েছে জার্মানির সর্বোচ্চ আদালত। ২০১৯ সালে একজন আফগান নারী বৈধ পাসপোর্ট ছাড়াই জার্মানিতে এসে আশ্রয়ের আবেদন জানালে দেশটির অভিবাসন ও শরণার্থী বিষয়ক ফেডারেল অফিস (বিএএমএফ)-এর কর্মকর্তারা তার ফোনে অনুসন্ধান চালিয়েছিলেন।

মূলত ওই শরণার্থীর সম্পর্কে তথ্য পাওয়ার জন্যই তার ফোনে অনুসন্ধান চালানোর কাজটি করা হয়। আর সেভাবে প্রাপ্ত তথ্য পরে ওই নারীর আবেদন প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করা হয়।

তবে গত বৃহস্পতিবার লাইপসিশের ফেডারেল অ্যাডমিনস্ট্রেটিভ কোর্ট সেটিকে অবৈধ বলে রায় দিয়েছে। কারণ, শরণার্থীর পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য কর্মকর্তারা প্রথমে অন্য উপায়গুলো অবলম্বন না করে ওই শরণার্থীর ফোন তল্লাশি করেছিলেন।

রায় ঘোষণার পর বাদীর আইনজীবী ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠান সোসাইটি ফর সিভিল রাইটস (জিএফএফ)-এর আইনি দলের সদস্য লিয়া বেকম্যান বলেন, ‘আদালত একটি পৃথক মামলায় রায় দিয়েছে, কিন্তু আমাদের মক্কেলের সঙ্গে যা হয়েছে, তা জার্মানিতে ঘটছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটি এখন স্পষ্টভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে বিএএমএফের এমন চর্চা অবৈধ ছিল। তাই বিএএমএফকে অবশ্যই এই ধরনের কাজ বন্ধ করতে হবে।’

জিএফএফ-এর সহায়তায় আফগান ওই আশ্রয়প্রার্থী ২০২০ সালে জার্মানির অভিবাসন ও শরণার্থী বিষয়ক ফেডারেল অফিসের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। এরপর ২০২১ সালের জুনে বার্লিনের একটি আঞ্চলিক আদালত তার পক্ষে রায় দেয়। বিএএমএফ ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে লাইপসিশে দেশের শীর্ষ বিচারকদের দ্বিতীয়বার সেটা দেখার অনুরোধ জানায়। 

অবশ্য গত বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতের বিচারকরা আগের রায় বহাল রাখেন। তারা জানান, বাদীর ফোন তল্লাশি করার আগে বিএএমএফের উচিত ছিল তার জাতীয়তার প্রমাণ হিসাবে জমা দেওয়া অন্যান্য নথিগুলো (বৈবাহিক সনদ, আফগানিস্থানের নথি) পরীক্ষা করা।

আদালতের এই আদেশ নিয়ে বিএএমএফ কোনও মন্তব্য করেনি। তবে বিচারের আগে বিএএমএফ অফিসের একজন মুখপাত্র এক বিবৃতিতে শরণার্থীর ফোন অনুসন্ধানকে ‘দেশের নিরাপত্তা ও আশ্রয় আবেদনের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্তে নির্ভুলতার জন্য মৌলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ’ বলে সমর্থন করেছিলেন।

২০১৭ সালে জার্মানির আশ্রয় আইনে যুক্ত করা একটি অনুচ্ছেদে কর্তৃপক্ষকে আশ্রয়প্রার্থীদের মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ এবং ট্যাবলেটে তথ্য অনুসন্ধানের অনুমতি দেওয়া হয়। তবে শর্ত ছিল বৈধ পাসপোর্ট বা আইডি কার্ড সরবরাহ করতে ব্যর্থ হলে এবং যদি অন্যান্য উপায়ে তার পরিচয় নির্ধারণ করা না যায় তাহলেই সেটি করা যাবে।

২০১৭ সালে এই প্রথা চালু করার পর থেকে আশ্রয়প্রার্থীদের ৮০ হাজারেরও বেশি ডিভাইসে তল্লাশি করা হয়েছে। সুশীল সমাজ ও ডাটা সুরক্ষা নিয়ে কাজ করে এমন সংস্থাগুলো এর সমালোচনা করে আসছিল।

টিএম