অতীতের এক গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, সড়কের ট্রাফিক জ্যাম ও তার ফলে সৃষ্ট শব্দদূষণ গাড়ি চালকদের আক্রমণাত্মক, অবসাদগ্রস্ত ও ক্ষিপ্ত স্বভাবের করে তোলে; কিন্তু সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, ট্রাফিক জ্যাম ও তা থেকে সৃষ্ট শব্দদূষণ সাধারণ যাত্রীদের উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় উল্লেখযোগ্য হারে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক হৃদরোগ গবেষণা প্রতিষ্ঠান আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলজি এবং যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষকদলের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে ‍এসেছে এ তথ্য। ৮ বছরেরও বেশি সময় ধরে যুক্তরাজ্যের প্রায় আড়াই লাখ স্বেচ্ছাসেবীর তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন গবেষকরা। এই স্বেচ্ছাসেবীদের সবারই বয়স ৪০ থেকে ৬৯ বছরের মধ্যে।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্ডিওভাসকুলার মেডিসিন এবং পপুলেশন হেলথ বিভাগের অধ্যাপক এবং গবেষকদলের একজন জেষ্ঠ্য সদস্য কাজেম রাহিমি সিএনএনকে বলেন, ‘ব্যস্ত ও কোলাহলপূর্ণ সড়কগুলোতে যে মাত্রার শব্দদূষণ হয়, তা প্রায় বায়ুদূষণের সমতুল্য।‘

‘বায়ুদূষণের কারণে এমনিতেই উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি তৈরি হয়, সেটি আরও বাড়িয়ে দেয় ট্রাফিক জ্যাম ও তার ফলে সৃষ্ট শব্দ দূষণ।’

তবে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক জানিয়েছেন, শব্দদূষণ ঠিক কোন মাত্রায় পৌঁছালে মানুষরে জন্য তা সরাসরি উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি সৃষ্টি করে— সে সম্পর্কে এখনও তারা স্পষ্ট নন।

‘ট্রাফিক জ্যামের সময় শব্দদূষণ নিম্নপর্যায়ে থাকার সময় থেকেই এটির দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকেন মানুষ। দূষণ যত উচ্চমাত্রার হয়, ঝুঁকির পরিমাণও তত বাড়ে; তবে ঠিক কোন মাত্রায় এই দূষণ পৌঁছালে তা উচ্চরক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ে— সে সম্পর্কে আমরা এখনও স্পষ্ট ধারণা পাইনি।’

ট্রাফিক জ্যাম থেকে সৃষ্ট শব্দদূষণ রোধে সাধারণ জনগণের সচেতনতার পাশাপাশি নীতি নির্ধারকদেরও কঠোর হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন কাজেম রাহিমি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে ৩০ থেকে ৭৯ বছর বয়সী ১২৮ কোটি মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। আর এই ভুক্তভোগীদের দুই তৃতীয়াংশই স্বল্পোন্নত এবং মাঝারি আয়ের বিভিন্ন দেশের।

এসএমডব্লিউ