বর্তমানে আমরা নগরায়ণের প্রভাবে আধুনিকীকরণকে আলিঙ্গন করে নিয়েছি। আমাদের চারপাশের সব কিছুই আধুনিক বিজ্ঞানের সঙ্গে সম্পর্কিত। যদিও এর ফলাফল সর্বদা আশানুরূপ নয়। কেননা বন থেকে শুরু করে অন্যান্য সমস্ত প্রাকৃতিক সম্পদের ওপরে পা রেখে এ নগরায়ণ বা আধুনিকীকরণের কুফলও আমাদের জীবনে প্রবেশ করেছে।

পৃথিবীতে এখনো এমন কিছু অদ্ভুত উপজাতি রয়েছে, যারা নিজেদের নগরায়ণ ও আধুনিকতা থেকে দূরে রেখেছে। এক অর্থে তারা পৃথিবী থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্নভাবে বসবাস করেছে। এমনকি আধুনিক বিশ্বে আমরা কীভাবে জীবনযাপন করছি সেই বিষয়েও এদের কোনো ধারণা নেই। আজ এমন পাঁচ উপজাতির সম্পর্কে আলোচনা করা হবে, যারা বিশ্বের সবচেয়ে বিচ্ছিন্ন উপজাতির মধ্যে অন্যতম।

সেন্টিনেলিজ উপজাতি

এ উপজাতির বসবাস ভারতের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের উত্তরে সেন্টিনেল দ্বীপে। দেশটির সরকার এ দ্বীপে পর্যটক বা অন্য মানুষদের যাতায়াত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে। এ উপজাতিটিকে নগর-সমাজ থেকে সব থেকে নির্জন ও বিচ্ছিন্ন উপজাতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আশ্চর্যজনকভাবে এদের ভাষাও সম্পূর্ণ আলাদা। এদের মূল পেশা হচ্ছে বনের প্রাণী শিকার করে বেঁচে থাকা। অনুমান করা হয়, তাদের মোট জনসংখ্যা ৫০ থেকে ২০০ জন। এরা সাধারণত অচেনা মানুষ দেখলেই হামলা চালায়। ২০১৮ সালে গণমাধ্যমে এমনই এক হামলার ঘটনা উঠে এসেছিল। এমনকি ওই হামলায় এক বিদেশি পর্যটক প্রাণ হারান।

ইয়াইফো এবং অন্যান্য উপজাতি

পাপুয়া নিউ গিনিতে এমন ৪০টিরও বেশি উপজাতি রয়েছে, যাদের সঙ্গে আধুনিক সভ্য সমাজের খুব বেশি যোগাযোগ নেই। পূর্বে ইয়াইফো উপজাতিও এমন এক উপজাতি। এছাড়া ১৯৭০ সালে কোরওয়াই উপজাতিও প্রথমবারের মতো নগরসমাজের চোখে পড়ে। বর্তমানে অনেক পর্যটকরা প্রায়ই অনুমতি ছাড়া এ দ্বীপে ভ্রমণ করেন। এর ফলে এ উপজাতিটি নিজেদের স্বাতন্ত্র্য খুইয়ে ফেলতে চলেছে।

মাশকো পিরো

পেরুর সীমান্তবর্তী আমাজনের গহিন বনে মাশকো-পিরো উপজাতিদের বসবাস, যারা সভ্য ও নগরকেন্দ্রিক সভ্যতা থেকে এখনও বহুদূরে বাস করে আসছে। এরা বছরের পর বছর বিচ্ছিন্নভাবে বসবাস করছে। এদের জনসংখ্যা বর্তমানে প্রায় ৬০০ থেকে ৮০০ জন।

মক্সিহাতেতেমা

ব্রাজিল এবং ভেনিজুয়েলার মধ্যবর্তী রিজার্ভ ফরেস্টের বাসিন্দা মোক্সিহাতেতেমা। এ অঞ্চলটিকে ইয়ানোমামি রিজার্ভও বলা হয়। তারা বাইরের পৃথিবী থেকে নিজেদের সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। এদের মোট জনসংখ্যা মাত্র ১০০ জন। তবে ২০১৬ সালে বিমান থেকে তোলা কিছু ছবির সাহায্যে বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন এদের জনসংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। তবে তারা বাইরের সমাজ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। অবৈধ সোনার খনিতে অবস্থিত এ উপজাতির বসতির ওপর ক্রমশই আশঙ্কার মেঘ ঘনিয়ে আসছে।

এফকে