তুমুল জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে মঙ্গলবার (৯ মে) ‘অবৈধভাবে আল-কাদির ট্রাস্টকে জমি বরাদ্দ দেওয়ার’ একটি দুর্নীতি মামলায় আটক করা হয়।

আরও পড়ুন>>> কেন গ্রেপ্তার হলেন ইমরান খান?

ইমরানের বিরুদ্ধে এ মামলাটি করেছিল ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো (ন্যাব)। তবে পাকিস্তানের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইমরানকে গ্রেপ্তারের জন্য ন্যাবকে শুধুমাত্র ব্যবহার করা হয়েছে। মূলত এসব কিছুর পেছনের কলকাঠি নেড়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। এতসব করা হয়েছে ইমরান যেন ‘অদূর ভবিষ্যতে’ কোনোভাবে ক্ষমতায় না আসতে পারেন।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পাক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বেনজির শাহ বলেছেন, এর আগেও দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ন্যাবকে দিয়ে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের দমনের চেষ্টা চালিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী। এখন ইমরান খানের বেলাতেও সেই একই কাজ করা হয়েছে।

তিনি বলেছেন, ‘এই ঐতিহ্য এখনও চলছে বলে মনে হচ্ছে। ন্যাব যে দুর্নীতির তদন্ত করছে এর সঙ্গে ইমরান খানের গ্রেপ্তারের খুব বেশি সংশ্লিষ্টতা নেই। গ্রেপ্তারের সঙ্গে বেশি সংশ্লিষ্টতা রয়েছে— ইমরান খান গত কয়েকদিন ধরে সামরিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করে আসছেন সেটির সঙ্গে।’

আরও পড়ুন>>>গ্রেপ্তারের আগে ভিডিও বার্তায় কী বলেছিলেন ইমরান?

মোহাম্মদ ফয়সাল নামে রাজধানী ইসলামাবাদের এক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক বলেছেন, ইমরানের খানকে গ্রেপ্তারের কারণে, দেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এমন পর্যায়ে চলে যেতে পারে যা পরবর্তীতে স্থিতিশীল করা নাও যেতে পারে। এই পর্যবেক্ষকের মতে, সেনাবাহিনীর ইন্ধনে গ্রেপ্তার হওয়ায় ‘ইমরানের প্রধানমন্ত্রী হয়ে ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা কমে এসেছে।’

তিনি বলেছেন, ‘এটি দেখা যাচ্ছে, দুটি বড় শক্তির মধ্যকার রাজনৈতিক সংঘাত পাকিস্তানের অসংখ্য সমস্যার ওপর আঘাত হেনেছে। পিটিআই এবং সেনাবাহিনী আক্রমণাত্মক দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ছে।’ তিনি যোগ করেন, ‘আমরা মনে হয় খানকে ক্ষমতায় ফিরতে দেখব না’ লম্বা সময়ের জন্য।  

কয়েকদিন ধরেই সেনাবাহিনীর ‘অতিরিক্ত ক্ষমতা’ চর্চার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন ইমরান। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সেনাবাহিনীর সঙ্গে কিছু বিষয় নিয়ে তার দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছিল। এসব কারণে সামরিক বাহিনী তার ওপর ক্ষুব্ধ ছিল।

আরও পড়ুন>>>ইমরান খানের গ্রেপ্তার : নজিরবিহীন বিক্ষোভে ফুঁসছে পাকিস্তান

তবে এর আগে ন্যাবকে দিয়ে যেসব রাজনৈতিক নেতাকে দমনের চেষ্টা করা হয়েছিল— তাদের চেয়ে ইমরানের বিষয়টি আলাদা। কারণ অন্যদের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে এত বড় পরিসরে আন্দোলন করতে দেখা যায়নি। কিন্তু ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিতে নাম লেখানো ইমরানকে গ্রেপ্তারের পরপরই পুরো দেশের মানুষ রাস্তায় নেমে যান।  

সূত্র: আল জাজিরা

এমটিআই