বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে যুক্ততার বিষয়ে প্রথমে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির বক্তব্যের প্রতিবাদ করলেও পরে সেজন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভার কংগ্রেসের এমপি শশী থারুর। সংবাদমাধ্যমগুলোর এ বিষয়ক প্রতিবেদন তাড়াহুড়ো করে পড়ার কারণেই এই বিভ্রাট হয়েছে বলে শনিবার এক টুইটবার্তায় বলেছেন তিনি।

শুক্রবার বিকেলে বাংলাদেশের জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ড মুজিব চিরন্তন অনুষ্ঠানমালার সমাপনীতে সম্মানিত অতিথি হিসেবে যোগ দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নিজ বক্তৃতায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তিনি।

পাশাপাশি এ সময় তিনি বলেন, ‘আমি এখানকার তরুণ প্রজন্মের আমার ভাই ও বোনদের খুব গর্বের সঙ্গে একটি বিষয় স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নেওয়া আমার জীবনের প্রথম আন্দোলনগুলোর মধ্যে একটি ছিল। আমার বয়স তখন ২০-২২ বছর ছিল, যখন আমি ও আমার অনেক সহকর্মী বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতার জন্য সত্যাগ্রহ করেছিলাম। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সমর্থন করায় আমি গ্রেফতার হয়েছিলাম এবং কারাগারেও গিয়েছিলাম।’

‘অর্থাৎ বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য যতটা আকুলতা এখানে ছিল, ততটা আকুলতা সেখানেও ছিল। এখানে পাকিস্তান সেনাবাহিনী কর্তৃক সংঘটিত জঘন্য অপরাধ ও নৃশংসতার চিত্রগুলো আমাদের বিচলিত করত এবং রাতের পর রাত বিনিদ্র করে রাখত।’

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে এ খবর প্রকাশিত হওয়ার পর শুক্রবার এক টুইটবার্তায় শশী থারুর বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষকে ভুয়া নিউজের আস্বাদ দিলেন মোদি। সবাই জানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে কার ভূমিকা প্রধান ছিল।’

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামে সর্বতোভাবে সহযোগিতা করেছিল ভারত। সে সময় দেশটির প্রধানমন্ত্রী ছিলেন কংগ্রেস নেত্রী ইন্দিরা গান্ধী। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে যাওয়া শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়াসহ মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক জনমত গঠনে প্রভূত ভূমিকা ছিল তার।

এই বিষয়টিকে ঘিরেই মোদির বক্তব্যের ভিন্ন অর্থ এসেছিল শশী থারুরের সামনে। তিনি ভেবেছিলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ইন্দিরা গান্ধীর অবদানকে খাটো করেছেন। পরে অবশ্য ভুল ভেঙেছে তার। টুইটারে সেটি স্বীকারও করেছেন থারুর।

শনিবারের টুইটবার্তায় থারুর বলেন, ‘তাড়াহুড়ো করে পত্রিকার হেডলাইন পড়ার কারণে ভেতরের সংবাদ ভালো করে লক্ষ করিনি। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে ইন্দিরা গান্ধীর প্রভূত অবদান ছিল। আমি ভেবেছিলাম নরেন্দ্র মোদি তার ভাষণে ইন্দিরা গান্ধীর অবদান খাটো করেছেন।’

‘পরে দেখলাম ব্যাপারটি এমন নয়। আমার ভুল হয়েছিল; সেজন্য আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি।’

সূত্র: রিপাবলিক ওয়ার্ল্ড, এনডিটিভি

এসএমডব্লিউ/এমএমজে