চিরবৈরি দেশ উত্তর কোরিয়ায় গতকাল ঢুকে পড়েন যুক্তরাষ্ট্রের এক সেনা। এরপর তাকে আটক করে কোরিয়ান কর্তৃপক্ষ। বুধবার (১৯ জুলাই) হঠাৎ করেই এমন চমক জাগানিয়া খবর শুনতে পান বিশ্ববাসী।

ট্রাভিস কিং নামের এই মার্কিন সেনার এমন অদ্ভুত কাণ্ডের পর বেরিয়ে আসছে বিভিন্ন তথ্য। জানা যায়, তিনি নিজ ইচ্ছায় শত্রু দেশের কাছে ধরা দেন।

আর এবার নতুন করে জানা গেছে, তিনি হাসতে হাসতে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে উত্তর কোরিয়ার ঢুকে পড়েন। একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, শুধু হাসি নয়— ট্রাভিস উত্তরের সীমান্তে প্রবেশের আগে অট্টহাসিতে ফেটে পড়েন।

ওই সেনা সম্পর্কে আরও কিছু নতুন তথ্য সামনে এসেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, ট্রাভিস পুলিশের গাড়িতে হামলা ও শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে দুই মাস কোরিয়ান জেলে আটক ছিলেন। গত ১০ জুলাই তিনি মুক্তি পান। এরপর তার যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস শহরে নিজ ঘাঁটি ফোর্ট ব্লিসে চলে যাওয়ার কথা ছিল।

টেক্সাসে ফেরত পাঠাতে ট্রাভিসকে সেনা পুলিশের সদস্যরা দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলের কাছের ইনচন বিমানবন্দরে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু যেহেতু বিমানের কাছ পর্যন্ত যাওয়ার সুযোগ ছিল না— ফলে তারা তাকে বিমান বন্দরের ভেতর পর্যন্ত দিয়ে চলে আসেন।

তবে ইমিগ্রেশনে গিয়ে চালাকি করেন ট্রাভিস। তিনি ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাকে জানান, তার পাসপোর্ট হারিয়ে গেছে। এরপর ওই কর্মকর্তা তাকে বাইরে নিয়ে আসেন। সেখান থেকেই ট্রাভিস পালিয়ে যান এবং একটি ট্যুর গ্রুপের সঙ্গে উত্তর-দক্ষিণ কোরিয়ার ডিমিলিটারাইজড জোনে (ডিএমজেড) যান। সেখানে বেশ কয়েকজনের সঙ্গে ঘুরছিলেন এই মার্কিন সেনা। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে তখনই হঠাৎ করে উত্তর কোরিয়ার ভেতর ঢুকে পড়েন তিনি।

ওই ট্যুরে থাকা ট্রাভিসের একজন সহ-পর্যটক জানিয়েছেন, ট্রাভিস হঠাৎ করে জোরে হা হা হা শব্দ করে হাসেন; এরপর উত্তর কোরিয়ার সীমান্তের ভেতর থাকা ভবনের ভেতর মিলিয়ে যান।

ওই ট্যুর গ্রুপটিকে নিরাপত্তা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল জাতিসংঘের কমান্ড সিকিউরিটি ফোর্স। ট্রাভিস উত্তর কোরিয়ার দিকে দৌড় দেওয়ার পর সিকিউরিটি ফোর্সের সদস্যরা তাকে আটকানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।

ট্রাভিস কেন এমন কাজ করলেন সেটি এখনো জানা যায়নি। তবে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন জানিয়েছেন, ওই সেনা স্বেচ্ছায় উত্তরে প্রবেশ করেছেন; কিন্তু বর্তমানে তার অবস্থা কী এ ব্যাপারে তারা কিছু জানেন না।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

এমটিআই