ভোটের আগে তৃণমূল কর্মীকে হত্যার অভিযোগ
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণের আগেই রক্ত ঝরল। ভোটগ্রহণের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূলের এক কর্মীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি।
কলকাতার সংবাদমাধ্যম এইসময় জানিয়েছে, ভোটের আগেই হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া ওই তৃণমূল কর্মীর নাম উত্তম দোলাই। তিনি পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুর এলাকার দাদপুর গ্রামের বাসিন্দা।
বিজ্ঞাপন
সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, বুধবার রাতে উত্তম দোলাইয়ের পেটে ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে কেশপুর হাসপাতালে প্রথমে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। পরে রাত ২টার দিকে মারা যান তিনি।
এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি গোটা ঘটনায় রিপোর্ট তলব করেছে নির্বাচন কমিশন।
বিজ্ঞাপন
আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, বুধবার রাত ১১টার দিকে কেশপুর ব্লকের ৪ নম্বর অঞ্চলের দাদপুর গ্রামের হরিহর চক বুথ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।চল্লিশোর্ধ্ব উত্তম তৃণমূলের বুথ সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তার পরিবারের অভিযোগ, রাতে ভাত খেতে বসেছিলেন উত্তম। সেই সময় বাড়িতে ঢুকে এসে হামলা চালায় দুষ্কৃতীকারীরা।
নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, টেনে হিঁচড়ে উত্তমকে ঘর থেকে বার করে নিয়ে যায় দুষ্কৃতীকারীরা। বাড়ির বাইরে একটি সাঁকোর কাছে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক তাকে মারধর করা হয়। তার পর পেটে ছুরিকাঘাত করে তারা।
তাদের অভিযোগ, বাড়ির ৫০ মিটারের মধ্যে একাধিক বার ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয় উত্তমকে। তারপর পেটে পুরো ছুরি ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এত জোরে আঘাত করা হয় যে, ছুরির ফলা পেটে ঢুকে গেলেও, হাতলটি বাইরে থেকে যায়।
বিজেপি আশ্রিত প্রায় ৩০-৩৫ জন দুষ্কৃতীকারী মিলে হামলা চালায় বলে অভিযোগ উত্তমের পরিবারের। তারা জানিয়েছেন, হামলার পর গুরুতর জখম অবস্থায় মেদিনীপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় উত্তমকে। কিন্তু সেখানে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
তবে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে বিজেপি।
এদিকে বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার মোট ৩০টি আসনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। তবে সব আসনকে ছাপিয়ে এ পর্বে সবার নজর হাই-ভোল্টেজ আসন পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম। পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির পালাবদলের আঁতুরঘর এ নন্দীগ্রামে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা ও তারই একসময়ের বিশ্বস্ত ’সেনাপতি’ তথা বর্তমান বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী।
ভোটের আগের দিন অর্থাৎ বুধবার নন্দীগ্রামে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে সেখানে এক হাজারেরও বেশি কেন্দ্রীয় পুলিশের সদস্য আনা হয়েছে। আকাশপথে নজরদারির বন্দোবস্ত করা হয়েছে। শুধু ওই আসনের জন্য থাকছেন এক পর্যবেক্ষক। অতিরিক্ত ডিজি পশ্চিমাঞ্চলেরর নেতৃত্বে পাঠানো হচ্ছে অতিরিক্ত দুজন আইপিএস অফিসারকে।
বুধবার পুর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক সুমিতা পান্ডে জানিয়েছেন, নির্বাচনে অনিয়ম সহিংসতা বরদাশত করা হবে না। নিরাপত্তার কোনো কমতি নেই। তার মতে, সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী যে কোনো বুথ এলাকাতেই ১৪৪ ধারা জারি থাকে। কিন্তু নন্দীগ্রামের ক্ষেত্রে শুধু এটুকুই নয়, গোটা বিধানসভা এলাকাতেই ১৪৪ ধারা বজায় থাকবে।
টিএম