করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত সারা বিশ্ব। টানা এক বছরের বেশি সময় ধরে মহামারিতে ভুগতে থাকা বিশ্ব এখন মোকাবিলা করছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। এরমধ্যেও চলছে জীবন, চলছে দাফতরিক কর্মকাণ্ডও। আর তাই অফিস-আদালতের মতো বহু জনসমাগম হয় এমন স্থানে স্যানিটাইজার ব্যবহার এখন পরিচিত দৃশ্য।

কিন্তু ভারতের উত্তরপ্রদেশের মিরাটের নৌচান্দি থানায় এলে সবার অভিজ্ঞতা পুরোপুরি ভিন্ন হতে পারে। সেখানে রীতিমতো মাথায় গঙ্গাজল ছিটিয়ে ও কপালে চন্দনের ফোঁটা লাগিয়ে মানুষকে করোনাভাইরাস থেকে ‘শুদ্ধ’ করে তোলা হয়!

শুনতে যতই অবিশ্বাস্য মনে হোক, মিরাটের নৌচান্দি থানার অফিসার প্রেমচন্দ শর্মা সেখানে এমনই ব্যবস্থা চালু রেখেছেন। থানায় ঢুকলেই চোখে পড়বে সারি সারি বোতলে রাখা গঙ্গাজল। গঙ্গাজল ছেটানোর পাশাপাশি ‘স্যানিটাইজেশন মন্ত্র’ও পড়া হয়। তারপর উপহার দেওয়া হয় এক বোতল গঙ্গাজল।

বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতোমধ্যেই থানার সেই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, কেবল সেবা নিতে থানার ভেতরে আসা বহিরাগতরাই নন, কর্মরত পুলিশ সদস্যদের মাথায়ও চন্দনের ফোঁটা পরিয়ে দিচ্ছেন ওই কর্মকর্তা। এভাবেই করোনাকে হারিয়ে মানুষের মনকে শান্ত করতে চান তিনি!

নিজের চালু করা এই অভিনব পদ্ধতি নিয়ে অত্যন্ত খুশি সংশ্লিষ্ট ওই পুলিশ কর্মকর্তা। কেবলমাত্র করোনা সংক্রমণ নিয়ে তিনি চিন্তিত নন। প্রেমচন্দ শর্মার দাবি, তার এই পরীক্ষায় মানুষের মধ্যে আক্রমণাত্মক ভাব অনেক কমেছে বলে দেখা গেছে।

প্রেমচন্দের ভাষায়, ‘আমার এক্সপেরিমেন্ট সফল হয়েছে। মানুষ এখন আগের থেকে অনেক কম আক্রমণাত্মক। তারা এখানে আসছেন ও শান্তভাবে অভিযোগ জানিয়ে ফিরে যাচ্ছেন। বলতে গেলে গোটা নৌচান্দি অঞ্চলই করোনা থেকে শান্ত হয়ে গিয়েছে। তাই বলে দুষ্কৃতীকারীদের বিরুদ্ধে আমরা কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছি না, তা নয়।’

অবশ্য প্রেমচন্দ শর্মার এসব সব কর্মকাণ্ড সম্পর্কে কিছুই জানা নেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের। খবর পেয়ে ওই এলাকার পুলিশ সুপার বিনীত ভটনাগর বলছেন, এমন সব কাণ্ডের কিছুই জানা ছিল না তার।

তিনি বলেন, ‘প্রতিটি থানাতেই স্যানিটাইজার রাখা থাকে। আমি জানি না কেন ওখানে গঙ্গাজল ব্যবহার করা হচ্ছে। আমি এসম্পর্কে কিছুই জানতাম না। অবশ্যই পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’

টিএম