আসামকে করিডোর হিসেবে ব্যবহার করছে রোহিঙ্গারা
আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা
বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামকে করিডোর হিসেবে ব্যবহার করে দিল্লি-কাশ্মির যাচ্ছে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গারা। এক্ষেত্রে তাদের সহযোগিতা করছে ত্রিপুরার কিছু মানব পাচারকারী।
আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা এই অভিযোগ করেছেন। শুক্রবার রাজ্যের বনগাঁওয়ে পুলিশ সুপারিন্টেন্ডেটদের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘গত কয়েক বছরে আসাম সীমান্ত দিয়ে ভারতে অবৈধ প্রবেশ প্রায় শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গারা এই রাজ্যকে করিডোর হিসেবে ব্যবহার করে দিল্লি-কাশ্মিরের দিকে যাচ্ছে; আর এক্ষেত্রে তাদের সহযোগিতা করছে ত্রিপুরার কিছু মানবপাচারকারী। সাম্প্রতিক এক তদন্তে এই তথ্য আমরা জানতে পেরেছি।’
বিজ্ঞাপন
এই রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী আসামের বারাক উপত্যকার তিন জেলা কাছাড়, করিমগঞ্জ এবং হাইলাকান্দিকে ত্রিপুরার পাচারকারীরা ব্যবহার করছে বলে মন্তব্য করে হিমন্ত বলেন, ‘করিমগঞ্জের পুলিশ বিভাগকে ইতোমধ্যে এ ব্যাপারে সচেতন হয়েছে। সীমান্ত এলাকায় নজরদারীও বৃদ্ধি করেছে তারা।’
‘কিন্তু অন্য দুই জেলার পুলিশকেও সতর্ক হতে হবে। আমরা যে কেবল আমাদের সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের যাতায়াত বন্ধ করব, তা ই নয়— বরং এই কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করে আমরা ত্রিপুরা যাব এবং পাচারকারীদের গ্রেপ্তার করে এই চক্রের মেরুদণ্ড ভেঙে দেবো।’
বিজ্ঞাপন
এই কাজে আসামের রেল বিভাগকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আসামে অনুপ্রবেশ বন্ধে বারাক উপত্যকার এই ৩ জেলার রেল বিভাগের সহায়তা আমাদের প্রয়োজন হবে। কাছাড়, করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দির প্রতিটি রেলস্টেশনে গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়াতে হবে। কারণ এই তিন স্টেশন থেকে দরিদ্র ভারতীয় যাত্রীদের বেশে রোহিঙ্গারা ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে।’
২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের আরকান প্রদেশের কয়েকটি পুলিশ স্টেশন ও সেনা ছাউনিতে একযোগে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। দেশটির রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মি (আরসা) সেই হামলার দায় স্বীকারও করে।
তারপর আরাকানের রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সেই অভিযানে সেনাবাহিনীর হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট ও গ্রামের পর গ্রাম অগ্নিসংযোগের মুখে টিকতে না পেরে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেন।
কিন্তু বাংলাদেশের সরকার তাদের নাগরিকত্ব প্রদানে সম্মত না হওয়ায় কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার কুতুপালং আশ্রয় শিবিরে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের অনেকেই অবৈধ পথে ভারত-পাকিস্তান-মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় পাড়ি জমাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
সূত্র : এনডিটিভি
এসএমডব্লিউ