দু সপ্তাহ আগে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ দাবানলের ধকল এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঙ্গরাজ্য হাওয়াইয়ের মাউই দ্বীপ। দ্বীপটির লাহাইনা শহরসহ অন্যান্য এলাকায় অন্তত ১ হাজার ১০০ জন মানুষ এখনও নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গেছে।

গত ৯ আগস্ট বুধবার ভোরে হাওয়াইয়ের মাউই দ্বীপে দাবানলের সূত্রপাত হয় এবং অত্যন্ত অল্প সময়ের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়ে। দাবানলের মূল কেন্দ্র ছিল দ্বীপটির পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর লাহাইনা।

১২ হাজার মানুষ অধ্যুষিত লাহাইনা মূলত একটি পর্যটন শহর এবং মাউই দ্বীপে আগত পর্যটকদের প্রধান কেন্দ্র। দ্বীপটির অধিকাংশ হোটেল-রিসোর্টের অবস্থান লাহাইনায়। হাওয়াইয়ের দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তর ও স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, দাবানলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লাহাইনা।

ঠিক কী কারণে এত বড় দাবানল ঘটল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের কর্মকর্তারা মাউই দ্বীপে গত কিছুদিন ধর চলা তাপপ্রবাহ ও তার জেরে গাছপালা শুকিয়ে যাওয়া, বাতাসে জলীয় বাস্পের স্বল্পতা, এবং প্রশান্ত মহাসাগরে উদ্ভূত ঘুর্ণিঝড় ডোরার প্রভাবে সৃষ্ট প্রবল বাতাকে এই দাবানলের প্রধান কারণ বলে উল্লেখ করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে গত একশ বছরে এত বড়মাত্রার দাবানল দেখা যায়নি। আগুনে পুড়ে ঝাঁঝরা হয়ে যাওয়া বিভিন্ন ভবন থেকে এ পর্যন্ত ১১৫টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

যেসব দেহ উদ্ধার করা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে মাত্র ২৭ জনের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। বাকিদের পরিচয় জানা যায়নি।

এদের বাইরেও দাবানলের পর থেকে অন্তত ১ হাজার ১০০ জনের সন্ধান এখনও পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেছে পুলিশ, রেডক্রস এবং উদ্ধার তৎপরতার সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন সংস্থা। এই দাবি যাচাই করছে যুক্তরাষ্ট্রের যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)।

এফবিআইয়ের বিশেষ এজেন্ট স্টিভেন মেরিল বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘দাবানলের পর থেকে খোঁজ পাওয়া যাচ্ছেন না— এমন লোকজনের একটি তালিকা পুলিশ আমাদের দিয়েছে। সেই তালিকা যাচাইয়ের পর থেকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ১০০ জনের নিখোঁজ থাকা সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।’

লাহাইনা ও মাউই দ্বীপের অন্যান্য অংশে বসবাসকারী মানুষকে এক্ষেত্রে এফবিআইকে সহযোগিতা করার অনুরোধও জানান মেরিল। এফবিআইকে তিনি বলেন, ‘নিশ্চিত হওয়া নিখোঁজদের ডিএনএ সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়া আমরা ইতোমধ্যে একটি টেলি যোগাযোগ হটলাইন করেছি এবং যারা দাবানলে তাদের বন্ধু-স্বজনদের হারিয়েছেন, তাদেরকে হটলাইনে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানাচ্ছি। সাধারণ লোকজনের সহযোগিতা ছাড়া আমরা এগোতে পারব না।’

এসএমডব্লিউ