কাশ্মিরসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ব্যাপক দ্বন্দ্ব-বিরোধ থাকা সত্ত্বেও ভারতের সফল চন্দ্রাভিযানকে প্রথম পাতায় খুবই গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে পাকিস্তানের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। এক টুইটবার্তায় ভারতের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন দেশটির সাবেক মন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরীও।

বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের অধিকাংশ দৈনিক ও অনলাইন পত্রিকার প্রধান প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল, ‘প্রথম দেশ হিসেবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছাল ভারত’।

পাকিস্তানের শীর্ষ টেলিভিশন ও অনলাইন সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের ওয়েব ডেস্ক বুধবার যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তাতে গত ১৪ জুলাই ভারতের নভযান চন্দ্রযান ৩’র চাঁদ অভিমুখে যাত্রা থেকে শুরু করে চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ পর্যন্ত বিভিন্ন খুঁটিনাটি তথ্য অনুপুঙ্খভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

এছাড়া ডন, দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল, দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন, বিজনেস রেকর্ডার, দুনিয়া নিউজসহ অন্যন্য সংবাদমাধ্যমও ভারতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বার্তাসংস্থার বরাত দিয়ে চন্দ্রযান ৩’র চাঁদে অবতরণসংক্রান্ত বিভিন্ন সংবাদ প্রকাশ করেছে।

গত ১৪ জুলাই ভারতের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশনের (ইসরো) সার্বিক তত্ত্বাবধানে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য অন্ধ্রের শ্রীহরিকোটা শহরের সতীশ ধাওয়ান থেকে চাঁদের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে চন্দ্রযান ৩। যাত্রা শুরুর ৪০ দিন পর চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফলভাবে অবতরণ করতে সক্ষম হয় নভোযানটি।

বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসেবে সফল চন্দ্রাভিযান পরিচালনা করল ভারত। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এভং চীন— তিনটি দেশ এই সাফল্য অর্জন করেছে।

তবে চতুর্থ সফল দেশ হলেও ভারতের এই অভিযানের অন্য তাৎপর্য রয়েছে। সেটি হলো, ভারতই বিশ্বের প্রথম দেশ, যেটি চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নভোযান পাঠাতে পেরেছে। চাঁদের ওই অংশ সম্পর্কে এখনও অনেক কম জানে মানুষ।

বুধবার চন্দ্রপৃষ্ঠে চন্দ্রযান ৩’র অবতরণের পূর্বে ও পরে— দুই বার টুইট করেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন সরকারের তথ্যমন্ত্রী এবং পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) সাবেক নেতা ফাওয়াদ চৌধুরি। প্রথম টুইটবার্তায় তিনি বলেন, ‘সবার চোখ এখন চন্দ্রযান ৩ নভোযানের দিকে, সন্ধ্যা ৫টা ৪০ মিনিটে যেটির চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করার কথা। আজকে ভারতের বিজ্ঞানী ও মহাকাশ গবেষকদের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন। অসাধারণ এই অর্জনের জন্য ভারতের জনগণকে অভিনন্দন।’

২য় টুইটবার্তায় ফাওয়াদ লেখেন, ‘চন্দ্রযান ৩ চাঁদে অবতরণ করেছে। কী অসাধারণ একটি মুহূর্ত! ইসরোর চেয়ারম্যান এস সোমনাথকে ঘিরে তার কর্মীদের যে উল্লাস-উদযাপন— তা আমি এখান থেকেই অনুভব করতে পারছি। একমাত্র তরুণ প্রজন্মই পারে এই বিশ্বকে বদলে দিতে। শুভকামনা।’

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে কাশ্মিরের পুলওয়ামাতে ভারতীয় সেনাদের বহনকারী একটি গাড়িতে হামলা চালিয়েছিল পাকিস্তান সমর্থক বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলো। সেই হামলার জবাবে পাকিস্তানের বালাকোটের জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অভিযান চালিয়েছিল ভারতীয় বিমানবাহিনী। আবার ওই বছরই জুলাই জম্মু-কাশ্মিরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা বাতিল করে বিতর্কিত সেই ভূখণ্ডকে ভারতের কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে পরিণত করে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার।

তারপর থেকে চরম বৈরীতা চলছে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে।

সূত্র : এনডিটিভি

এসএমডব্লিউ