বেসামরিক জাহাজকে লক্ষ্য করে ক্রুজ মিসাইল নিক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে। গত মাসে ইউক্রেনের ওডেসা বন্দরে পণ্যবাহী একটি জাহাজকে লক্ষ্য করে ওই ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয় বলে অভিযোগ করেছে যুক্তরাজ্য।

যদিও ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রুশ ওই হামলার চেষ্টা ব্যর্থ করে দেয় বলেও দাবি করেছে দেশটি। মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়া গত মাসে ইউক্রেনের ওডেসা বন্দরে বিশ্রাম নেওয়ার সময় একাধিক ক্রুজ মিসাইল দিয়ে বেসামরিক পণ্যবাহী একটি জাহাজকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করেছে বলে যুক্তরাজ্য অভিযোগ করেছে।

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ আগস্ট ওই হামলার চেষ্ট হয় এবং ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সেটি ব্যর্থ করে দেয়। লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী ওই জাহাজটির দিকে রাশিয়ান রণতরী থেকে ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল বলেও জানিয়েছে তারা।

এর আগে নিজেদের শর্ত পূরণ না হওয়ায় কৃষ্ণসাগর শস্যচুক্তি থেকে সরে আসার ঘোষণা দেয় রাশিয়া। এক বছর আগে তুরস্ক ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে এ চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। চুক্তির মাধ্যমে কৃষ্ণসাগর দিয়ে নির্বিঘ্নে আন্তর্জাতিক বাজারে যেতে পারত ইউক্রেনের খাদ্যশস্য।

তবে গত ১৭ জুলাই চুক্তিটির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। এরপর রাশিয়া সেটির মেয়াদ বাড়াতে অস্বীকৃতি জানায়। যদিও রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয়ই বর্তমান বিশ্বের প্রধান শস্য রপ্তানিকারক দেশ।

আর এরপর কৃষ্ণসাগরে জাহাজ ঢুকলেই তাতে হামলার ইঙ্গিত দেয় রাশিয়া। চুক্তির মেয়াদ শেষের পর এক বিবৃতিতে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ইঙ্গিত দেয়, রাশিয়ার সম্মতি ছাড়া ইউক্রেনের শস্য নিতে, কৃষ্ণসাগরে যদি কোনও জাহাজ প্রবেশ করে তাহলে সেটিতে হামলা চালানো হবে। কারণ এসব জাহাজকে অস্ত্রবাহী হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

সোমবার পার্লামেন্টে ভাষণ দেওয়ার সময় যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেন, শস্যবাহী জাহাজে হামলা ব্যর্থ হলেও এটি প্রমাণ করেছে- ‘পুতিন আসলে ঠিক কতটা মরিয়া’। তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনের আন্তর্জাতিক জলসীমার মাধ্যমে তার পণ্য রপ্তানি করার অধিকার রয়েছে এবং তাদের শস্য পাঠানোর নৈতিক অধিকারও রয়েছে।’

অবশ্য ওই হামলার বিষয়ে রাশিয়া এখনও কোনো মন্তব্য করেনি।

তবে শস্য চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার পর থেকে মস্কো ক্রমবর্ধমানভাবে ইউক্রেনের বন্দর অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে হামলা জোরালো করেছে। কিয়েভ এই ধরনের হামলাকে তার শস্য রপ্তানিকে ক্ষতিগ্রস্ত করার এবং বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তাকে ক্ষুণ্ন করার জন্য ‘নিষ্ঠুর’ প্রচেষ্টার অংশ বলে অভিযোগ করেছে।

এক বিবৃতিতে ইউক্রেনীয় পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, রাশিয়া চুক্তি থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করার পর থেকে ২ লাখ ৮০ হাজার টন শস্য ধ্বংস করেছে। এছাড়া কর্মকর্তারা বলেছেন, গত জুলাই মাস থেকে রাশিয়ার হামলায় ওডেসা এবং নিকটবর্তী বন্দর চোরনোমর্স্ক ও রেনির ২৬টি বন্দর অবকাঠামোগত স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

টিএম