মাত্র এক মিনিটের জন্য এত প্রাণহানি!
গত সপ্তাহে তাইওয়ানের একটি এক্সপ্রেস ট্রেনের সাথে যে ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়ে অর্ধশত মানুষের মৃত্যু হয়েছিল, দুর্ঘটনার মাত্র এক মিনিট আগে ওই ট্রাকটি পিছলে রেল লাইনের ওপর চলে আসে বলে জানা যাচ্ছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশটির সরকারি কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার এমন তথ্য জানিয়েছে। এছাড়া দেশটিতে কয়েক দশকের সবচেয়ে বড় ওই রেল দুর্ঘটনার একটি নাটকীয় ভিডিও ফুটেজেও দেখানো হয়েছে কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে।
বিজ্ঞাপন
ট্রেনটিতে যাত্রী ও রেলকর্মীসহ মোট প্রায় ৫০০ মানুষ ছিলেন। শুক্রবার পূর্বাঞ্চলীয় হুয়ালিয়েন শহরে এক সুড়ঙ্গ দিয়ে চলার সময় ট্রেনটি ট্রাকে আঘাত হেনে লাইনচ্যুত হলে ট্রেনটির সম্মুখ ও মধ্যভাগ দুমড়ে-মুচড়ে যায়।
গত সাত দশকে তাইওয়ানে এমন ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা ঘটেনি। বলা হচ্ছে, যাত্রীদের অধিকাংশই ছিলেন পর্যটক ও ঘরমুখী যাত্রী। তারা বার্ষিক ছুটি উপলক্ষে ভ্রমণ করছিলেন। সকাল নয়টার দিকে ট্রেনটি দুর্ঘটনার মুখে পড়ে।
বিজ্ঞাপন
ট্রাকটি ছিল সুড়ঙ্গের পাশে। সেখানে নির্মাণ কাজ চলছিল। ট্রেনটি সুড়ঙ্গ থেকে বের হওয়ার মুহূর্তে ট্রাকটি ঢালু রাস্তা হয়ে রেল লাইনের ওপর চলে যায়। কর্মকর্তারা বলছেন, ট্রাকটির ব্রেক সিস্টেম ছিল ত্রুটিপূর্ণ। ওই নির্মাণাধীন এলাকার যে ব্যবস্থাপক তাকে নিয়ে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা।
তাইওয়ান ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ডের চেয়ারম্যান ইয়ং হং-সু বলছেন, রেল লাইনের ওপর গিয়ে ট্রাকটি কীভাবে থেমে গেল সেটি পর্যবেক্ষণ করেছে তারা। ঢালু দিয়ে পড়ে রেল লাইনে চলে যাওয়ার আগে ট্রাকটির চলাচল এবং অপরদিক থেকে আসা ট্রেনটির সঙ্গে কীভাবে সংঘর্ষ হলো সব বিষয় পর্যবেক্ষণের কাজ চলছে।
চালকের আসন থেকে নেওয়া ফুটেজ দেখিয়েছেন তিনি। তাতে দেখা যাচ্ছে, কতটা প্রাণন্ত চেষ্টা করে তিনি ট্রেনের গতি কমানোর চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি সেটা করতে পারেননি। আর কিছু করতে না পারর কারণে যাত্রীবোঝাই ট্রেনটি ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। মুহূর্তেই প্রাণ হারান অর্ধশত মানুষ।
ইয়ং হং-সু বলছেন, ‘ট্রাকটি তার অবস্থান নিয়ে সরে গিয়ে টারোকো এক্সপ্রেসে আঘাত হানার মধ্যে ঠিক কত সময়ের ব্যবধান ছিল। প্রকৃতপক্ষে এর মধ্যে সময়ের ব্যবধান ছিল এক মিনিটের কিছু বেশি।’
তিনি আরও বলেন, ট্রেনটির গতি কমিয়ে দুর্ঘটনা এড়ানোর মতো যথেষ্ট সময় চালকের হাতে ছিল না। মাত্র কয়েক সেকেন্ড ছিল তার হাতে। ট্রেনটি যেখানে ছিল সুড়ঙ্গ থেকে বের হয়ে তা স্পষ্ট দেখার সময় ছিল না যথেষ্ট।
ইয়ং জানিয়েছেন, তাইওয়ান কর্তৃপক্ষ মার্কিন জাতীয় পরিবহন সুরক্ষা বোর্ড ও ফ্রান্সের পরিবহন সুরক্ষা সংস্থার সাথে যোগাযোগ করেছে। তারা এই তদন্তে সহায়তা করতে আগ্রহী কিনা তা জানার জন্যই এই যোগাযোগ।
এএস