প্রশান্ত মহাসাগরে উদ্ভুত ঘূর্ণিঝড় ওতিসের আঘাতে মেক্সিকোর উত্তরাঞ্চলের ২ পর্যটন শহর কোইউকা দে বেনিতেজ এবং অ্যাকাপুলকোতে নিহত হয়েছেন ৪৮ জন এবং এখনও নিখোঁজ আছেন অন্তত ৩৬ জন।

এছাড়া ঝড়ের তাণ্ডবে গুরুতর ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে দুই শহরের প্রায় ২ লাখ ৭৩ হাজার ঘরবাড়ি, ৬০০টি হোটেল এবং ১২০টি হাসপাতাল। নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে অনেক রেস্তোঁরা-ছোটো দোকান এবং বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে দুই শহরের বিদ্যুৎ, মোবাইল ও টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

রোববার বিকেল থেকে অবশ্য বিদ্যুৎ-মোবাইল-টেলিফোন সংযোগ স্বাভাবিক হওয়া শুরু করেছে অনেক এলাকায় তবে এখনও অনেক এলাকা বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ বিচ্ছন্ন রয়েছে। 

কোইউকা দে বেনিতেজের পৌর প্রশাসন জানিয়েছে, ঝড়ে আর্থিক হিসেবে মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি ডলার।

কয়েক দিন আগে প্রশান্ত মহাসাগরে উদ্ভূত হওয়ার পর স্থানীয় সময় শনিবার মাঝরাতের দিকে অ্যাকাপুলকোর উপকূলে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় ওতিস। মেক্সিকোর কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাগর থেকে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসার সময় ঝড়টির গতি এত বেশি ছিল, যে তারা পূর্বাভাস দেওয়ার পর অধিকাংশ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সময় পাননি।

জাতিসংঘের বৈশ্বিক আবহাওয়া ও জলবায়ু সম্পর্কিত বিশেষায়িত সংস্থা ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন জানিয়েছে, ২০১৫ সালের ঘূর্ণিঝড় ‘প্যাট্রিসিয়া’ আঘাত হানার পর গত ৮ বছরে এই প্রথম এত বিধ্বংসঢী কোনো ঝড় দেখলো কোইউকা দে বেনিদেজ এবং অ্যাকাপুলকোর লোকজন।

মেক্সিকোর স্থানীয় প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, ওতিসের মূল তাণ্ডব গেছে অ্যাকাপুলকো শহরের ওপর দিয়ে। শহরটিতে বসবাসকারী প্রায় ৭ লাখ ৮০ হাজার মানুষের অধিকাংশই ঝড়ে সবকিছু হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছেন।

তছনছ হয়ে যাওয়া অ্যাকাপুলকোয় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ধ্বংস্তূপে এখনও নিখোঁজদের সন্ধানে অভিযান চালাচ্ছেন দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীরা। এছাড়া ঝড়ের পর লুটপাটের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় অ্যাকাপুলকো এবং কোইউকা দে বেনিতেজে মোতায়েন করা হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর ১ হাজার ৭০০ সদস্যকে।

মেক্সিকোর প্রতিরক্ষা বাহিনীর স্থল ও নৌবাহিনীর সদস্যদের তত্ত্বাবধানে রোববার থেকেই দুই শহরের বিভিন্ন এলাকায় জরুরি ত্রাণ সরবরাহ শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।

সূত্র : এএফপি

এসএমডব্লিউ