গাজায় ‘কৌশলগত সাময়িক বিরতি’ ঘোষণায় রাজি ইসরায়েল
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় বসবাসকারীদের জন্য ত্রাণ-চিকিৎসা উপকরণ সরবরাহ এবং জিম্মিদের সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে উপত্যকায় ‘কৌশলগত সাময়িক বিরতি’ ঘোষণায় রাজি আছে ইসরায়েল; তবে সেটি কোনোভাবেই ‘যুদ্ধবিরতি’ হবে না।
সোমবার এই তথ্য জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনঞ্জামিন নেতানিয়াহু। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেন, ‘ছোটোখাট কৌশলগত বিরতি হতেই পারে; হয়তো এক ঘণ্টা বা তার কিছু বেশি সময়…অর্থাৎ আমি বলতে চাইছি গাজায় ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা পাঠানো এবং মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের গাজা থেকে বের হতে যতক্ষণ সময় লাগবে ততক্ষণ।’
বিজ্ঞাপন
‘কিন্তু আমি মনে করি না সেখানে একটি সাধারণ যুদ্ধবিরতি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা রয়েছে।’
গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলের ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চলানোর পর সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী। সেই অভিযান এখনও চলছে।
বিজ্ঞাপন
হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন ১ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক। এছাড়া হামলার প্রথম দিনই ইসরায়েল থেকে অন্তত ২৩৪ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় ধরে নিয়ে গেছে হামাস।
অন্যদিকে, ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর অভিযানে গাজায় নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ১০ হাজার। এই নিহতদের অর্ধেকেরও বেশি শিশু ও নারী।
গাজায় যুদ্ধ বাঁধার ৮ দিন পর, ১৬ অক্টোবর জাতিসংঘের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর সংস্থা নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব তোলে রাশিয়া। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের আপত্তির কারণে সেই প্রস্তাব বাতিল হয়ে যায়।
আপত্তির কারণ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য বলেছিল, গাজায় এখন যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হলে তা হামাসের পক্ষে যাবে এবং এই যুদ্ধবিরতে ফের তাদেরকে ইসরায়েলে হামলার জন্য সুযোগ করে দেবে।
একই যুক্তি দিয়ে ইসরায়েলও এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার বলেছে যে, হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার আগ পর্যন্ত যুদ্ধ থামাবে না তারা।
আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, ১৯৫৩ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর এই প্রথম এত বড় মাত্রার সংঘাত হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের আল-আকসা অঞ্চলে। বিমান বাহিনীর হামলায় গত এক মাসে গাজা উপত্যকায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন অন্তত ১৫ লাখ মানুষ। তাদের মধ্যে প্রায় ৬ লাখ ৭০ হাজার মানুষ আনরোয়া পরিচালিত স্কুলগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন।
সূত্র : রয়টার্স
এসএমডব্লিউ