বিরতির ৫ম দিনে ইসরায়েলি বাহিনীকে লক্ষ্য করে হামলা
গাজা ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির পঞ্চম দিনে উত্তর গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীকে লক্ষ্য করে বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার গাজার উত্তরাংশে ঘটেছে এই ঘটনা।
ইসরায়েলের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হেরজি হালেভি এক প্রেসব্রিফিংয়ে জানান, মঙ্গলবার বিকেলের দিকে উত্তর গাজায় অবস্থানরত ইসরায়েলি সৈন্যদলের ওপর আততায়ী বন্দুক হামলা হয়েছে। এতে কয়েকজন ইসরায়েলি সেনা আহত হয়েছেন। তবে সেই আঘাত খুব গুরুতর নয়।
বিজ্ঞাপন
এই ঘটনার কিছু সময় আগে গাজার উত্তরাংশে ইসরায়েলি সীমান্তের কাছে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনাতেও হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
মঙ্গলবার ছিল হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির ৫ম দিন। এই দিন ১০ জন ইসরায়েলি এবং ২ থাই জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। বিপরীতে এই দিন ইসরায়েলের ওফের কারাগার থেকে ৩০ ফিলিস্তিনিকে ছেড়ে দিয়েছে সেখানকার কারা কর্তৃপক্ষ।
বিজ্ঞাপন
যেসব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, তারা সবাই নারী এবং শিশু, আর মুক্তিপ্রাপ্ত দুই থাই নাগরিক ইসরায়েলে কৃষি শ্রমিকের কাজ করতেন।
ওফের কারাগার থেকে যে ৩০ ফিলিস্তিনি বন্দি ছাড়া পেয়েছেন, তাদের মধ্যে ১৫ জন নারী এবং ১৫ জন কিশোর।
টানা ৭ সপ্তাহ ধরে যুদ্ধের পর গত ২৫ নভেম্বর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চার দিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইসরায়েল এবং উপত্যকার রাজনৈতিক ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস। গত সোমবার সেই বিরতির শেষ দিন ছিল, তবে উভয়পক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতে বিরতির মেয়াদ আরও ২ দিন বাড়ানো হয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলের ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালানোর পর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। পরে ১৬ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনী।
ইসরায়েলি বাহিনীর টানা দেড় মাসের অভিযানে কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা, নিহত হয়েছেন ১৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। নিহত এই ফিলিস্তিনিদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি।
অন্যদিকে, হামাস যোদ্ধাদের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক।
ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলার চালানোর দিন এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে শত শত সামরিক-বেসামরিক মানুষকে হত্যার পাশাপাশি ২৪২ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় নিয়ে গিয়েছিলেন হামাসের যোদ্ধারা। এই জিম্মিদের মধ্যে ইসরায়েলিদের সংখ্যা ১০৪ জন। বাকি ১৩৮ জনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, জার্মানি, ফ্রান্স, আর্জেন্টিনা, রাশিয়া ও ইউক্রেনের নাগরিকরা রয়েছেন।
গত ৫ দিনে মোট ৮১ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। মুক্তিপ্রাপ্ত এই জিম্মিদের ৬০ জন ইসরায়েলি এবং ২১ জন বিদেশি নাগরিক। বিদেশিদের অধিকাংশই থাইল্যান্ডের।
অন্যদিকে সরায়েলের বিভিন্ন কারাগার থেকে ১৫০ জন ফিলিস্তিনিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, প্রতি ১০ জন জিম্মির বিনিময়ে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ একদিন করে বাড়াতে রাজি আছে ইসরায়েল।
রয়টার্স
এসএমডব্লিউ