টানেল থেকে উদ্ধার হওয়া এক শ্রমিক -গতকালের ছবি

দীর্ঘ ১৭ দিনের রুদ্ধশ্বাস অভিযান শেষে গতকাল ভারতের উত্তরাখণ্ডের নির্মাণাধীন টানেল থেকে বের করে নিয়ে আসা হয় ৪১ শ্রমিককে। গত ১২ নভেম্বর ভোরে টানেলের একটি অংশ ধসে পড়ে। এরপর সেখানে আটকা পড়েন শ্রমিকরা।

ওই ৪১ শ্রমিকের একজন হলেন আখিলেস সিং। আটকাবস্থা থেকে মুক্ত হওয়ার পর আখিলেস কথা বলেছেন ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির সঙ্গে।

তিনি জানিয়েছেন, ওইদিন ভোরে কাজ শেষ করে বের হচ্ছিলেন তারা। তখন হঠাৎ করে তার ঠিক সামনেই টানেলের একটি অংশ ধসে পড়ে।

আখিলেস বলেছেন, ‘টানেলটি আমার সামনে ধসে পড়ে। এরপর বিকট শব্দ হয়। শব্দের প্রভাবে আমার কান বন্ধ হয়ে যায়।’

‘বাইরের বিশ্বের সঙ্গে আমাদের ১৮ ঘণ্টা কোনো যোগাযোগ ছিল না। তবে আমাদের ট্রেনিং অনুযায়ী, আমরা পানির একটি পাইপ খুলে দেই। যখন পানি পড়া শুরু করে; বাইরের মানুষ বুঝতে পারেন ভেতরে শ্রমিকরা আটকা পড়েছে। এরপর আমাদের পাইপের মাধ্যমে অক্সিজেন পাঠানো শুরু হয়।’ যোগ করেন আখিলেস।

তিনি জানিয়েছেন, উদ্ধারকারীরা অল্প সময়ের মধ্যে ধ্বংসস্তূপের ভেতর দিয়ে তাদের কাছে একটি লম্বা পাইপ পাঠাতে সমর্থ হয়। এরপর সেই পাইপ দিয়ে তাদের কাছে খাবার পাঠানো শুরু হয়। তাদের কাছে এত খাবার পাঠানো হয়েছে যে, এখনো টানেলের ভেতর ২৫ দিনের খাবার পড়ে আছে।

আখিলেস আরও জানিয়েছেন, এখন তিনি বাড়ি ফিরে যাবেন এবং কমপক্ষে এক থেকে দুই মাস বিশ্রাম নেবেন।

তিনি বলেছেন, ‘স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন হলে আমি বাড়ি ফিরে যাব। সেখানে এক থেকে দুই মাস বিশ্রাম নেব। এরপর সিদ্ধান্ত নেব পরবর্তীতে কি করব।’

উত্তরাখণ্ডের টানেল ধসের ঘটনা ঘটার পর দেশের সব টানেল পরীক্ষা-নিরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত সরকার। তবে উদ্ধার হওয়া এ শ্রমিক জানিয়েছেন, ওইদিন টানেলে যে ঘটনা ঘটেছে এটি একটি প্রাকৃতিক বিপর্যয় এবং এরজন্য কেউ দায়ী নয়।

শ্রমিকদের উদ্ধারে টানেলের ধ্বংসস্তূপে ২ মিটার চওড়া ও ৬০ মিটার লম্বা একটি পাইপ স্থাপন করা হয়। ওই পাইপের ভেতর দিয়ে বিশেষ চাকাচালিত স্ট্রেচারে করে এক এক করে সব শ্রমিককে বের করে আনা হয়।

সূত্র: এনডিটিভি

এমটিআই