ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) অভিজাত শাখা কুদস ফোর্সের সাবেক প্রধান কাশেম সোলাইমানির সমাধিস্থলের কাছে জোড়া বিস্ফোরণে ১০৩ জনের প্রাণহানির ঘটনায় একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দেশজুড়ে এই শোক পালন করা হবে বলে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনের খবরে জানানো হয়েছে।

খবরে বলা হয়েছে, কেরমানে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় সরকার আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) সারাদেশে শোক দিবস ঘোষণা করেছে।

এর আগে, বুধবার স্থানীয় সময় বিকেল ৩টার দিকে ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) অভিজাত শাখা কুদস ফোর্সের সাবেক প্রধান কাশেম সোলাইমানির চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জোড়া বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। দেশটির দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় কেরমান শহরে কাশেম সোলাইমানির সমাধিস্থল থেকে কয়েকশ মিটার দূরের এই বিস্ফোরণে অন্তত ১০৩ জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছেন।

ইরানের আধা-সরকারি সংবাদ সংস্থা তাসনিম নিউজ এজেন্সি বলছে, স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা ৪ মিনেটের দিকে প্রথম বিস্ফোরণটি ঘটেছে। জেনারেল সোলাইমানির সমাধিস্থলের দিকে যাওয়ার জন্য লোকজন যখন রাস্তায় জমায়েত হচ্ছিলেন, তখন এই বিস্ফোরণ ঘটে। প্রথম বিস্ফোরণের ১৩ মিনিটের মাথায় দ্বিতীয় বিস্ফোরণ ঘটেছে।

কেরমানের ডেপুটি গভর্নর বিস্ফোরণের এই ঘটনাকে ‘‘সন্ত্রাসী হামলা’’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘এটা সন্ত্রাসী হামলা।’’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিস্ফোরণের একাধিক ভিডিওতে বেশ কিছু মরদেহ ছিন্ন ভিন্ন অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।

হামলাকারীরা দুটি স্যুটকেসে রাখা বোমা দূর থেকে রিমোট কন্ট্রোলের সহায়তায় বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন বলে ধারণা করছে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী। এদিকে, বিস্ফোরণের এই ঘটনার হোতাদের চূড়ান্ত নিষ্পত্তিমূলক জবাব দেওয়া হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইআরজিসির কমান্ডার আহমাদ ভাহিদি।

ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, বিস্ফোরণে ১৯০ জন আহত হয়েছেন; যাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। কেরমানের সাহেব আল-জামান মসজিদের কাছে সোলাইমানির কবর থেকে কয়েকশ মিটার দূরে এই বিস্ফোরণ ঘটে।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির পর সোলাইমানিকে সবচেয়ে শক্তিশালী হিসেবে মনে করা হতো। ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি ইরাকের রাজধানী বাগদাদের বিমানবন্দরের কাছে মার্কিন ড্রোন হামলায় কুদস ফোর্সের প্রধান সোলাইমানি নিহত হন।

জেনারেল সোলাইমানি ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর অভিজাত শাখা কুদস ফোর্সের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। দেশের বাইরে— বিশেষ করে ইরাক, লেবানন এবং সিরিয়ায় ইরানের সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন ধরনের অভিযান তার নেতৃত্বে পরিচালিত হতো। 

এসএস