জার্মানির কাছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আরো ক্ষতিপূরণ দাবি
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ক্ষয়ক্ষতির জন্য জার্মানির কাছে নতুন করে ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাদোস্লাভ সিকরস্কি। মঙ্গলবার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পোল্যান্ডে নাৎসি বাহিনীর লুটপাটের ‘আর্থিক ক্ষতিপূরণ’ দাবি করেছেন দেশটির শীর্ষস্থানীয় এই মন্ত্রী।
গত ডিসেম্বরে পোল্যান্ডের ক্ষমতায় আসে বামঘেঁষা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ঘনিষ্ঠ নতুন সরকার। তারপর প্রথমবারের মতো বার্লিন সফর করেছেন মন্ত্রী সাদিস্লাভ সিকরস্কি। সফর চলাকালীন ক্ষতিপূরণের প্রসঙ্গ টানেন তিনি। একই সঙ্গে যুদ্ধের দুর্দশা থেকে বেরোতে পোল্যান্ড সৃজনশীল সমাধান চায় বলে জানিয়েছেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক সিকরস্কির সাথে বৈঠকের পর সাদিস্লাভ সিকরস্কি বলেন, ‘‘আরো শক্তিশালী ইউরোপ, যার কেন্দ্র আগামীতে আরো পূর্বের দিকে যাবে, তেমন ইউরোপের প্রয়োজন সর্বকালের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বার্লিন-ওয়ারশ সম্পর্ক ও এই সম্পর্কে আস্থা।’’
তিনি বলেন, ‘‘গণতান্ত্রিক জার্মানি ও পোল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক ফিরিয়ে আনতে হবে।’’
বিজ্ঞাপন
• আর্থিক ক্ষতিপূরণের দাবিতে সরব সিকরস্কি
বর্তমান সরকারের আগের সরকারের আমলেও এমন ক্ষতিপূরণের কথা উঠেছিল। ‘৫২ লাখ পোলিশ নাগরিকের মৃত্যুর জন্য’ তৎকালীন সরকার জার্মানির কাছে এক লাখ ৩০ কোটি ইউরোর ক্ষতিপূরণ দাবি করে।
বেয়ারবকের সাথে বৈঠকের পর সিকরস্কি জার্মান ভেল্ট টেলিভিশনকে বলেন, ‘‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পোল্যান্ডের সাথে জার্মানি যা করেছিল, তা ছিল নির্মম ও জঘন্য।’’
তিনি বলেন, যদি জার্মানি কোনো সৃজনশীল সমাধানের মাধ্যমে অনুশোচনা ব্যক্ত করে, যারা এতকিছুর পরেও বেঁচে আছেন, তাদের জন্য ভালো কিছু করে তাহলে তা পোল্যান্ডের জন্য ভালো হবে।
‘‘অতীতকে নৈতিকভাবে খতিয়ে দেখলে আর্থিক ক্ষতিপূরণই একমাত্র সমাধান হবে,’’ বলেন সিকরস্কি।
• এই দাবি মানবে না জার্মানি
এর আগের পোলিশ সরকারও জার্মানির ক্ষতিপূরণকে ‘নৈতিক দায়িত্ব বলেছিল। এই দাবি পরে পোল্যান্ড-জার্মান সম্পর্কে কিছুটা ভাঁটাও আনে। তবে জার্মানি এই দাবিকে আগে থেকেই খারিজ করে আসছে।
এক্ষেত্রে জার্মানি ১৯৫৩ সালের একটি সিদ্ধান্তের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে; যেখানে পোল্যান্ড তৎকালীন পূর্ব জার্মানির কাছ থেকে সকল দাবি প্রত্যাহার করে নিয়েছিল।
জার্মান কর্তৃপক্ষের মতে, ক্ষতিপূরণের বিতর্কের সমাধান হয়ে গেছে ১৯৯০ সালে। ওই সময় জার্মানির পুনরেকত্রীকরণ হয় ‘টু প্লাস ফোর’ চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, যেখানে পোল্যান্ডের কোনো ভূমিকা ছিল না।
এসএস