গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের বিরোধিতা এবং এ ইস্যুতে জাতিসংঘের আদালতের রায় সমর্থন করায় ইসরায়েলের পার্লামেন্ট নেসেট থেকে বহিষ্কারাদেশের মুখে পড়েছেন সেখানকার আইনপ্রণেতা ওফের ক্যাসিফ।

নেসেটের পার্লামেন্টারি কমিটি বুধবার তার বিরুদ্ধে আনা অভিশংসন প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে। অভিশসংসনের তারিখ অবশ্য এখনও নির্ধারণ করা হয়নি।

মোট ১২০টি আসন রয়েছে নেসেটে। ইসরায়েলের পার্লামেন্টারি আইন অনুযায়ী, অভিশংসন ভোটের দিন এমপিদের মধ্যে অন্তত ৯০ জন যদি তার পক্ষে থাকেন, তাহলে ক্যাসিফের আসন টিকে থাকবে; আর যদি এর বিপরীত ঘটনা ঘটে—  সেক্ষেত্রে নেসেট থেকে বহিষ্কৃত হবেন তিনি।

ওফের ক্যাসিফ ইসরায়েলের কমিউনিস্টপন্থি দল হাদাশ পার্টির নেতা। এই দলটি নেসেটের অন্যতম বিরোধী দল আরব তায়াল পার্টির নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক। আরব তায়াল পার্টিও বামঘেঁষা রাজনৈতিক দল।

গত ডিসেম্বরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মামলা করে জাতিসংঘের আদালত। মামলার অভিযোগপত্রে ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনার পাশাপাশি গাজা উপত্যকায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয়।

গত সপ্তাহে সেই মামলার রায় দিয়েছে জাতিসংঘ আদালত। সেই রায়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ এবং গাজায় যুদ্ধবিরতির ইস্যুটি এড়িয়ে গেছেন আদালত; তবে উপত্যকায় বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের প্রাণহানি ঠেকাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ইসরায়েলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রায়ে।

দক্ষিণ আফ্রিকা এই মামলা দায়েরের পর নেসেটে রীতিমতো ঝড় তুলেছিলেন বিরোধী এমপিরা। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টির ব্যাপক সমালোচনা শুরু করেছিলেন তারা। আর এই আইনপ্রণেতাদের মধ্যে সামনের সারিতে ছিলেন ক্যাসিফ।মূলত এ কারণেই তাকে অভিশংসনে পড়তে হচ্ছে তাকে।

নেসেটের পার্লামেন্টারি কমিটি অভিশংসন প্রস্তাব অনুমোদনের পর এ ইস্যুতে প্রতিক্রিয়া জানতে ক্যাসিফের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স; কিন্তু তিনি টেলিফোন ধরেননি। তবে তার দল হাদাশ পার্টি এবং রাজনৈতিক জোট এই পার্লামেন্টারি কমিটির সিদ্ধান্তকে ‘অবৈধ’ উল্লেখ করেছে।

অবশ্য অভিশংসনের ওপরেই যে ওফের ক্যাসিফের নিয়তি নির্ভর করছে— এমন নয়। ইসরায়েলের আইন অনুসারে, অভিশংসনের ফলাফল বিপক্ষে গেলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারবেন তিনি।

গত সপ্তাহে জাতিসংঘ আদালত রায় ঘোষণার পর ইসরায়েলের সংবাদামাধ্যম ডেমোক্রেসি নাউকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্যাসিফ বলেছিলেন, তিনি এই রায়কে স্বাগত জানাচ্ছেন।

বামপন্থি এই আইনপ্রণেতা আরও জানিয়েছিলেন, তিনি গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান এবং প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা— উভয়েরই বিরুদ্ধে।

সূত্র : রয়টার্স

এসএমডব্লিউ