ভারতের কাছ থেকে কলা কিনতে শুরু করেছে রাশিয়া। দেশটি থেকে এই ধরনের খাদ্যপণ্য আমদানি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে মস্কো। মঙ্গলবার রাশিয়ার খাদ্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত ওয়াচডগ সংস্থা রোসেলখোজনাদজর এই তথ্য জানিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সাথে রাশিয়ার তৈরি সামরিক হার্ডওয়্যার বিনিময়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে মস্কোতে কলার বৃহত্তম সরবরাহকারী ইকুয়েডরের বিরোধ শুরু হয়েছে। যে কারণে দেশটি থেকে কলা আমদানি স্থগিত করে ভারতীয় কলা কিনছে রাশিয়া।

রোসেলখোজনাদজর বলেছে, ভারত থেকে কলার প্রথম চালানটি রাশিয়ায় চলতি মাসেই পৌঁছেছে। আগামী মাসের শেষের দিকে ভারতীয় কলার দ্বিতীয় চালান মস্কোতে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। রাশিয়ার বাজারে ভারতীয় কলা রপ্তানির পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাবে বলে জানিয়েছে দেশটির এই ওয়াচডগ সংস্থা।

গত সপ্তাহে ইকুয়েডরের পাঁচটি কোম্পানির কাছ থেকে কলা আমদানি স্থগিত করে রোসেলখোজনাদজর। সংস্থাটি বলেছে, ইকুয়েডর থেকে আসা কলায় কীটপতঙ্গ পোকা শনাক্ত হয়েছে।

তবে ইকুয়েডরের খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থা বলেছে, রাশিয়ায় রপ্তানি করা মাত্র শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ কলায় পোকা মিলেছে। আর এতে কোনও স্বাস্থ্য ঝুঁকি নেই বলে ইকুয়েডরের গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে।

রাশিয়ার তৈরি সামরিক হার্ডওয়্যারকে ‘ইউক্রেনীয় ও রুশ স্ক্র্যাপ মেটাল’ হিসেবে অভিহিত করে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তরে ওয়াশিংটনের সাথে একটি চুক্তি করেছে ইকুয়েডর। রাশিয়ার সামরিক হার্ডওয়্যার হস্তান্তরের মাধ্যমে প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলারের মার্কিন উন্নত সমরাস্ত্র পাওয়ার কথা আছে ইকুয়েডরের। এই চুক্তির বিষয়টি ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর নিন্দা জানায় মস্কো। একই সঙ্গে ইকুয়েডরের কাছ থেকে কলা আমদানি স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি।

যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, ইকুয়েডরের অস্ত্র রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে। ২০২২ সাল থেকে ভারতের সাথে রাশিয়ার বাণিজ্যিক সম্পর্ক গভীর হয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে পশ্চিমা দেশগুলো মস্কোর বিরুদ্ধে ওই সময় একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার কারণে চীন, ভারত এবং অন্যান্য দেশগুলোর সাথে বাণিজ্য বাড়াতে বাধ্য হয় রাশিয়া।

রুশ কর্তৃপক্ষ মার্কিন-ইকুয়েডর চুক্তির সাথে ভারতীয় কলা আমদানির সিদ্ধান্তের ব্ষিয়টি যুক্ত নয় বলে জানিয়েছে। তবে মস্কোর সাথে বিরোধ আছে এমন দেশগুলো থেকে রাশিয়ার খাদ্য আমদানি স্থগিত করার ইতিহাস রয়েছে।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে ইকুয়েডরের কলার বৃহত্তম আমদানিকারক ছিল রাশিয়া। ইকুয়েডরের বার্ষিক মোট কলা রপ্তানির ২০ থেকে ২৫ শতাংশই রাশিয়ায় যায়।

রোসেলখোজনাদজর বলেছে, বিশ্বে কলার অন্যতম বৃহৎ উৎপাদনকারী ভারত রুশ বাজারে আম, আনারস, পেঁপে এবং পেয়ারার মতো অন্যান্য ফলও সরবরাহ আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

সূত্র: রয়টার্স।

এসএস