বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনা টিকা রফতানির পাশাপাশি গত এক বছরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অক্সিজেন রফতানিতেও রমরমা অবস্থা ছিল ভারতের। দেশটির সরকারী তথ্য বলছে, ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে বিশ্ববাজারে ৭০০ শতাংশ বেশি অক্সিজেন রফতানি করেছে ভারত।

সরকারী তথ্য সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরের শেষ নাগাদ বিশ্ব বাজারে সাড়ে চার হাজার মেট্রিক টন অক্সিজেন রফতানি করেছিল ভারত। এরমধ্যে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে জানুয়ারিতে রফতানির পরিমাণ ছিল ৩৫২ মেট্রিক টন; কিন্তু ২০২১ সালের জানুয়ারিতে এই পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৯০০০ মেট্রিকটনে, যা গতবছরের তুলনায় ৭৩৪ শতাংশ বেশি।

১ এপ্রিল থেকে অর্থবছর শুরু হয় ভারতে, শেষ হয় ৩১ মার্চ। চলতি বছর ফেব্রুয়ারি ও মার্চে কী পরিমাণ অক্সিজেন রফতানি করা হয়েছে, তা এখনও প্রকাশ করেনি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।

গত এক মাস ধরে চলমান করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বর্তমানে বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছে ভারত। দৈনিক সংক্রমণ ও মৃত্যুর তালিকায় ইতোমধ্যে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে দেশটি। ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত চব্বিশ ঘণ্টায় সেখানে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৯৫ হাজার ৪১ জন এবং এই সময়সীমার মধ্যে এ রোগে মারা গেছেন ২ হাজার ২৩ জন।

লাগামহীন ভাবে আক্রান্ত ও মৃত্যু বাড়ার ফলে সীমাহীন চাপে আছে ভারতের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। অতিরিক্ত করোনা রোগীর চাপ থাকায় দেশটির বেশিরভাগ রাজ্যের হাসপাতালগুলোতে নতুন রোগী ভর্তি করার মতো অবস্থা নেই। যেসব রোগী ইতোমধ্যে ভর্তি হয়েছেন, তাদেরকেও শয্যা, ওষুধ ও অক্সিজেন সরবরাহ করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালগুলো।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ভারতের রাজ্যগুলোর মধ্যে তুলনামূলকভাবে বেশি সংক্রমণ ঘটছে মহারাষ্ট্র, দিল্লি, পাঞ্জাব, হারিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, কেরালা, ছত্তিশগড় প্রভৃতি রাজ্যে।

এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সংকটে রয়েছে মহারাষ্ট্র ও দিল্লি। ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সূত্রে জানা গেছে, মহারাষ্ট্রে বর্তমানে প্রতি তিন মিনিটে একজন করোনা রোগী মারা যাচ্ছেন। অন্যদিকে, দিল্লিতে যারা করোনা টেস্ট করাতে আসছেন, তাদের প্রতি তিনজনে একজন শনাক্ত হচ্ছেন ‘পজিটিভ’ হিসেবে।  

এই পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই রাজ্যগুলোতে বিপুলভাবে বাড়ছে অক্সিজেনের চাহিদা। মঙ্গলবার এক টুইটবার্তায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানান, দিল্লির হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেনের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

সূত্র: এনডিটিভি

এসএমডব্লিউ