‘হয়তো এটাই শেষ সকাল’
ড. মনিশা যাদব
করোনা মহামারিতে যত দিন যাচ্ছে ভারতের অবস্থা আরও ভয়ানক হয়ে উঠছে। মহামারি শুরুর পর থেকে সকল রেকর্ড ছাপিয়ে দেশটিতে এখন দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় তিন লাখ। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা দিল্লি আর মহারাষ্ট্রের।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে টালমাটাল ভারতে খালি নেই হাসপাতালের বেড, আক্রান্ত হচ্ছেন চিকিৎসক-নার্সরাও। দিনের পর দিন করোনা রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে তাদের শরীরেও বাসা বাঁধছে এই ভাইরাস। আক্রান্ত হওয়ার পর কেউ সুস্থ হয়ে ফিরে আসছেন, আবার কেউ হার মেনে ঢলে পড়ছেন মৃত্যুর কোলে।
বিজ্ঞাপন
সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের রাজধানী মুম্বাইয়ের চিকিৎসক ড. মনিশা যাদব। ৫১ বছর বয়সী এই চিকিৎসক শহরের সেওরি টিবি হাসপাতালের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
করোনায় আক্রান্ত হয়ে কিছুদিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অবস্থা প্রতিদিন একটু একটু করে খারাপ হচ্ছিল। এরপর গত শনিবার ফেসবুকে তিনি একটি পোস্ট দেন। সম্ভবত নিজের সময় ফুরিয়ে আসছে বুঝতে পেরেই কিছু কথা শেয়ার করেছিলেন সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে।
সেখানে ড. মণীষা লেখেন, ‘সম্ভবত এটাই আমার জীবনের শেষ সকাল। আর কখনো এখানে আপনাদের সঙ্গে দেখা হবে না। সবাই নিজেদের যত্ন নেবেন। দেহের মৃত্যু হয়, কিন্তু আত্মার নয়। আত্মা অমর।’
এরপর সোমবারই তার মৃত্যু হয়। বেশ ভালো চিকিৎসক ছিলেন মনিশা। হাসপাতালে একাধারে চিকিৎসা ও প্রশাসন দু’টি বিষয়ই খুব ভালোভাবে সামলানোর জন্য খ্যাতি ছিল তার।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় রীতিমতো কাঁপছে ভারত। দেশটিতে ভয়াবহভাবে বেড়েই চলেছে ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। গত কয়েকদিন ধরে দেশটির দৈনিক করোনা সংক্রমণ দুই লাখ ছাড়িয়ে যাচ্ছে। বুধবার সেই সংখ্যা পৌঁছেছে তিন লাখের কাছাকাছি।
একইসঙ্গে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে মারা গেছেন রেকর্ড ২ হাজার ২৩ জন। । এ নিয়ে দেশটিতে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ৫৫৩ জনে।
বুধবার (২১ এপ্রিল) ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ২ লাখ ৯৫ হাজার ৪১ জন। যা মঙ্গলবারের তুলনায় প্রায় ৩৬ হাজার বেশি। সংক্রমণের এই রেকর্ড বৃদ্ধিতে দেশটিতে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১ কোটি ৫৬ লাখের ঘর।
টিএম/জেএস