মারাত্মক এক সংকটের মুখে পড়েছে পশ্চিম ভারতের গুজরাট রাজ্যের সুরাট শহরে অবস্থিত আশুতোষ মাল্টি-স্পেশালিটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কারণ, হাসপাতালটিতে এখন ৪৩০ জন কোভিড-১৯ রোগী ভর্তি রয়েছেন। আর সেখানে অক্সিজেনের মজুত আছে মাত্র তিন ঘণ্টার।

হাসপাতালটির একজন সিনিয়র চিকিৎসক মঙ্গলবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-কে এমন সংকটের কথাই জানান। বিষয়টি নিয়ে ওই সংবাদমাধ্যম একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এর মাধ্যমে মহামারি করোনায় বিপর্যস্ত ভারতে বর্তমান চিত্র ফুটে উঠেছে।

ডা. রাজভিরাজ চৌধুরী সিএনএনকে বলেন, ‘অল্প কিছু অক্সিজেন আসবে হয়তো। কিন্তু মানুষের যে চাপ এবং অক্সিজেনের প্রয়োজন এমন রোগীর সংখ্যা এত বেশি তা খুবই অপ্রতুল। এছাড়া অক্সিজেনের সরবরাহ পেতে হয়তো ছয় বা আট ঘন্টা সময় লাগতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অক্সিজেনর মজুত শেষ হয়ে আসছে। গতকাল থেকে হাসপাতালের কর্মীরা এক এক করে অনেক সরবরাহকারীর কাছে গেছেন কিন্তু তারা বাড়তি যে অক্সিজেনর প্রয়োজন তা যোগাড় করতে পারেননি। এটা খুবই উদ্বেগনক একটা পরিস্থিতি।’ 

ডা. চৌধুরী রোগীর স্বজনদের বলেছেন, অক্সিজেনের যোগান অনেক কম। তারা যেন তাদের রোগীদের অন্য হাসপাতালে নিয়ে যান। তিনি বলেন, ‘আমরা স্বজনদের বলেছি যে, আমাদের অক্সিজেন শেষ হয়ে আসছে। আপনারা যদি কোথাও থেকে অক্সিজেন যোগার করতে পারেন তাহলে আমরা উপকৃত হবে এবং আপনাদের স্বজনদের চিকিৎসা দিতে পারবো।’    

সিএনএন-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনস কোভিড-১৯ অ্যাকশন কমিটির সুরাজের চেয়ারম্যান নির্মলা চোরারিয়া বলছেন, শুধু আশুতোষ হাসপাতালই নয়, সুরাটের বেশিরভাগ হাসপাতালে এই সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে হাসপাতালগুলো রোগীদের অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন স্বজনদের।  

তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘গত রোববার থেকে গোটা শহর অক্সিজেন সংকটে ভুগছে। আর তাই শহরের ৪০০টি বেসরকারি হাসপাতাল পড়েছে মারাত্মক এক চ্যালেঞ্জের মুখে। শহরের দিনে ১১০ মেট্রিক টন অক্সিজেনের প্রয়োজন, কিন্তু চাহিদার তুলনায় হাসপাতালগুলো ২০ থেকে ৩০ মেট্রিক টন অক্সিজেন কম পাচ্ছে। ফলে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’   

নির্মলা চোরারিয়া বলেন, ‘অক্সিজেন যে পাবো তার কোনো নিশ্চয়তাও এখনো আমরা পাচ্ছি না। তাই গুরুতর রোগীদের জন্য কোনো হাসপাতালে একটি বেড পাওয়া এখন দুঃসাধ্য। তারা শুধু ছোটাছুটি করছেন। সংকট নিরসন না হলে অনেকেই প্রাণ হারাবেন।’

এএস