এতদিন শুধু করোনার টিকাগ্রহীতার ক্ষেত্রে এর প্রভাবের বিষয়ে জানা গেলেও যুক্তরাজ্যের এক গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যাস্ট্রাজেনেকা কিংবা ফাইজারের টিকার প্রথম ডোজ নেওয়ার পর কেউ আক্রান্ত হলে ঘরের কাউকে সংক্রমিত করার সম্ভাবনা ৫০ শতাংশ কমে যায়।

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফাইজার ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি টিকা নেওয়া ব্যক্তিদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে  গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোর মাধ্যমে এমন তথ্যই পেয়েছে যুক্তরাজ্যের দ্য পাবলিক হেল্থ ইংল্যান্ড’র (পিএইচই) গবেষকরা।

প্রায় ২৪ হাজার পরিবারের ৫৭ হাজার মানুষের ওপর এই গবেষণাটি চালানো হয়। টিকা না নেওয়া ১০ লাখ মানুষের সংস্পর্শে আসেন তারা। গবেষণায় জড়িতদের মধ্যে কতজন টিকা নিয়েছিলেন আর কতজন নেননি তার তূলনামূলক বিশ্লেষণ করে সংস্থাটি দেখেছে যে, যারা টিকা নিয়েও মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তারা বাকিদের তুলনায় ভাইরাসটির সংক্রমণ ছড়িয়েছেন কম। 

আরও দেখা গেছে, টিকার প্রথম ডোজ নেওয়ার তিন সপ্তাহের মধ্যে কোনো ব্যক্তি আক্রান্ত হলে তার সংস্পর্শে আসা ঘরের অন্যান্যদের মধ্যে সংক্রমণের হার ৩৮ থেকে ৪৯ শতাংশ কমে যায়। ঘরের অন্য ব্যক্তিরা টিকা না নিলেও এমনটি দেখা গেছে গবেষণাটিতে। 

গবেষণায় পাওয়া ফলাফলে উচ্ছাস প্রকাশ করে ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক বলেছেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে জেনেছি, টিকা মানুষের জীবন বাঁচায়। আর ব্যাপক তথ্য-উপাত্ত নিয়ে এ গবেষণা দেখাচ্ছে, টিকা নেওয়া ব্যক্তি প্রাণঘাতী ভাইরাসটির সংক্রমণ কমিয়ে দেয়।’

এর আগে এক গবেষণায় দেখা গেছে, টিকা নেওয়ার চার সপ্তাহ পর কোনো ব্যক্তির মধ্যে উপসর্গ তৈরি হওয়ার হার ৬৫ শতাংশ কমে যায়। পিএইচই’র আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, সফল টিকাদান কর্মসূচির ফলে গত মার্চ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে ষাটোর্ধ্ব ১০ হাজার ৪০০ মানুষকে করোনা থেকে বাঁচানো গেছে।

পিএইচইর টিকাদান কর্মসূচির প্রধান ম্যারি র‌্যামসি বলেন, ‘টিকা শুধু অসুস্থতার মাত্রা ও প্রতিদিন শত শত মানুষের মৃত্যু কমিয়ে দিচ্ছে না, বরং অন্যদের মধ্যে কোভিড-১৯ সংক্রমণ কমিয়ে দেওয়ার মতো প্রভাব ফেলছে।’

এএস