গাজায় স্কুল-শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলা, শিশুসহ নিহত ১১
ইসরায়েলের বোমা হামলায় নিহত আত্মীয়দের জন্য দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের একটি হাসপাতালে কান্নায় ভেঙে পড়েছে এক ফিলিস্তিনি কিশোর। সোমবারের ছবি
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে স্কুল ও শরণার্থী শিবিরে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে কমপক্ষে ১১ জন নিহত হয়েছেন। গাজা শহরের একটি স্কুল ও মধ্য গাজার মাগাজি শরণার্থী শিবিরে চালানো পৃথক হামলায় তারা প্রাণ হারান।
হামলায় আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন। মঙ্গলবার (২৫ জুন) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
বিজ্ঞাপন
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজা শহরের কেন্দ্রস্থলে বাস্তুচ্যুত লোকদের আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহৃত একটি স্কুলে বোমা হামলা চালিয়েছে এবং এতে কমপক্ষে ছয়জন নিহত হয়েছেন বলে স্থানীয় মিডিয়া জানিয়েছে।
গাজা শহরের আল-দারাজ এলাকার আবদেল-ফানাহ হামমুদ স্কুলে চালানো এই হামলায় আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
এছাড়া মাগাজি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় আরও অন্তত ৫ জন নিহত হয়েছেন। আল জাজিরা বলছে, মধ্য গাজার মাগাজি শরণার্থী শিবিরের একটি বাড়িতে ইসরায়েলি হামলার ফলে অজ্ঞাত সংখ্যক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে তাৎক্ষণিকভাবে জানা গিয়েছিল।
ফিলিস্তিনের সরকারি বার্তাসংস্থা ওয়াফা পরে জানায়, ওই হামলায় তিন শিশুসহ অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন এবং আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
এদিকে গাজা উপত্যকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ২৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি আগ্রাসনে মোট মৃতের সংখ্যা ৩৭ হাজার ৬২৬ জনে পৌঁছেছে বলে সোমবার অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামলায় আরও ৮৬ হাজার ৯৮ জন আহত হয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের হামলায় ২৮ জন নিহত এবং আরও ৬৬ জন আহত হয়েছেন। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন
এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।
এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।
টিএম