উত্তরপ্রদেশে মানুষখেকো নেকড়ের হানা, দেড় মাসে নিহত ৭
উত্তরপ্রদেশের তরাই অঞ্চলে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মানুষখেকো নেকড়ের দল। অভিযোগ, গত দেড় মাসে তাদের শিকার হয়েছে ছয় জন শিশুসহ মোট সাত জন এবং আহত হয়েছেন আরও ২২ জন।
উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনসূত্রে জানা গেছে, রাজ্যের বাহারআইচ জেলার মাহসি ব্লকের সিসিয়া পঞ্চায়েত এবং আশপাশের অঞ্চলগুলিতেই মূলত ঘটছে নেকড়ের হামলার বিভিন্ন ঘটনা। ইতোমধ্যে একটি নেকড়েকে ধরতে পেরেছেন বন বিভাগের একটি টিম।
বিজ্ঞাপন
টিমের সদস্যরা জানিয়েছেন, হামলাকারী ওই দলে মোট নেকড়ে রয়েছে ৬টি। এই নেকড়েদের সন্ধানে ইতমধ্যেই ২২টি দল গঠন করেছে উত্তরপ্রদেশের বন দপ্তর। বনকর্মীদের পাশাপাশি সেসব দলে আছেন দক্ষ শিকারি এবং বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞেরা। রয়েছে ড্রোন, নাইট ভিশনসহ নানা আধুনিক সরঞ্জাম। যোগী আদিত্যনাথ সরকারের বনমন্ত্রী অরুণকুমার সাক্সেনা বুধবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে জানিয়েছেন, নেকড়ের দলকে কব্জায় আনতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
বাহারআইচ জেলার নেপাল সীমান্তবর্তী কাটার্নিয়াঘাট ব্যাঘ্রপ্রকল্পের বাফার জ়োনে নেকড়ের উপস্থিতি রয়েছে। প্রাথমিক অনুমান, ওই তিনটি নেকড়ে সেখান থেকেই লোকালয়ে এসে ডেরা বেঁধেছে।
বিজ্ঞাপন
নরেন্দ্র মোদী সরকারের ‘ন্যাশনাল চিতা অ্যাকশন প্ল্যান’র (জাতীয় চিতা পুনঃস্থাপন কর্মসূচি) প্রধান এবং বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ যাদবেন্দ্রনাথ ঝালা অবশ্য বাহারআইচের ঘটনার জন্য নেকড়ের দল দায়ী কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তার কথায়, ‘‘নেকড়েরা সাধারণ ভাবে লাজুক প্রাণী। মানুষকে আক্রমণের নজির খুবই কম।’’ অতীতে কাটার্নিয়াঘাট লাগোয়া জঙ্গলে বাঘ এবং চিতাবাঘের হামলায় মানুষের মৃত্যুর ঘটনার অনেক নজির আছে বলেও জানান তিনি।
সদলবদলে জঙ্গলে ঢুকে, ড্রোন উড়িয়ে মানুষখেকোর নাগাল আদৌ পাওয়া সম্ভব কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। বন-বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞদের একাংশ মানছেন, জঙ্গলে ড্রোন ওড়ানো যথেষ্ট ঝামেলাপূর্ণ। কারণ, ড্রোন ওড়াতে তুলনামূলকভাবে পাতলা জঙ্গল বাছতে হয়; কিন্তু এই মাঝ বর্ষায় পুরো এলাকাই ঘন সবুজে ঢাকা। ফলে মানুষখেকো বাঘ বা চিতাবাঘ সেখানে সেখানে ঘাপটি মেরে থাকলে সন্ধান পাওয়া কঠিন।
১৯৭২ সালের ভারতীয় বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী ধূসর নেকড়ে ১ নম্বর তফসিল অর্থাৎ সর্বোচ্চ গুরুত্বে সংরক্ষিত প্রজাতি। সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুযায়ী ভারতে তাদের আনুমানিক সংখ্যা তিন হাজারেরও কম।
এসএমডব্লিউ