করোনা রোগীকে বিবস্ত্র অবস্থায় বাড়ি পাঠাল হাসপাতাল
করোনা মহামারিতে বিপর্যস্থ ভারত। দেশটিতে করোনা ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ায় হাসপাতালগুলোতে ঘটছে নানান অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। তেমনি এক ঘটনা ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে।
করোনায় আক্রান্ত ৯২ বছরের বৃদ্ধকে যাদবপুরের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি করেছিলেন তার কন্যা। মঙ্গলবার হাসপাতাল থেকে বাবাকে আনতে গিয়েই চক্ষু চড়কগাছ। বিবস্ত্র অবস্থায় নিজের বাবাকে ওয়ার্ডে শুয়ে থাকতে দেখলেন কন্যা! হাসপাতালের বক্তব্য, উনি জামাকাপড় ফেলে দিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
প্রসঙ্গত, চোখে ভাল দেখতে পান না ওই বৃদ্ধ। বার্ধক্যজনিত কারণে কানেও ভাল শুনতে পান না তিনি। প্রশ্ন উঠছে, বয়সের ভারে কার্যত শারীরিক প্রতিবন্ধী ওই বৃদ্ধ যদি কাপড় জামা ফেলে দিয়েও থাকেন, কেন আবারও সেগুলো পরিয়ে দেওয়া হলো না?
বৃদ্ধের মেয়ে বলছেন, এটা তো তাদের কর্তব্য। আমি বাবাকে ওই অবস্থায় ভর্তি করিনি। নিজের বাবাকে উলঙ্গ অবস্থায় শুয়ে থাকতে দেখতে হবে?
বিজ্ঞাপন
অ্যাম্বুলেন্সে করে নবতিপর প্রৌঢ়কে বাড়িতে আনার সময় তার মেয়ের প্রশ্ন, হাসপাতাল থেকে বাবাকে ছাড়ার সময় জামাকাপড় পর্যন্ত দেয়নি। যে জামা আমি পরিয়ে পাঠিয়েছিলাম ওরা বলেছে সেই জামা উনি ফেলে দিয়েছেন। যে রোগী চলাফেরা করতে অক্ষম সে নাকি নিজের জামাকাপড় ফেলে দিয়েছে! উলঙ্গ করে বাড়ি ফেরত পাঠানোর এই বিভৎসতা, অসম্মানের কোনো প্রতিকার হবে না?
এ ঘটনায় হতচকিত অ্যাম্বুলেন্স চালকও। তিনি ওই উলঙ্গ ব্যক্তির গায়ে অ্যাম্বুলেন্সে থাকা বিছানার চাদর জড়িয়ে দেন।
এই ঘটনার কথা শুনে বিস্মিত অনেকেই। স্থানীয় সমাজকর্মী রত্নাবলী রায় বলেন, একটি হাসপাতাল, যেখানে মানুষ শারীরিকভাবে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার স্বপ্ন দেখে। তারা রোগীকে উলঙ্গ করে বাড়িতে ফেরত পাঠাচ্ছে। এটা রাষ্ট্রের লজ্জা। গোটা ঘটনায় শুধুমাত্র ওই ভদ্রলোক উলঙ্গ হলো না। রাষ্ট্রের উলঙ্গ রূপটাই আমাদের চোখের সামনে ভেসে উঠল।
ওএফ