গাজা ভূখণ্ডে সাম্প্রতিক ১১ দিনের যুদ্ধে মধ্যপ্রাচ্য ও বৈশ্বিক রাজনীতির আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এসেছে সেখানকার রাজনৈতিক দল হামাস। জার্মানির সংবাদ মাধ্যম ডয়েচে ভ্যালে (ডিডব্লিউ) সম্প্রতি এই দলটির উত্থান ও গাজা ভূখণ্ডে এর কার্যক্রম নিয়ে একটি চিত্রগল্প (ফটোস্টোরি) করেছে। ঢাকা পোস্টের পাঠকদের জন্য এটি প্রকাশ করা হলো।

 

হামাসের উত্থান ও কার্যক্রম

২০০৭ সাল থেকে গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণ করে আসছে হামাস। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বেশিরভাগ দেশের কাছে তারা সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচিত। তবে হামাসের কিছু মিত্র দেশও রয়েছে।

 

উত্থানপর্ব

১৯৮০-এর দশকে ইয়াসির আরাফাতের প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) বিরোধিতায় হামাসের জন্ম। পিএলও বিরোধী শক্তি হিসেবে দাঁড় করাতে শুরুর দিকে ইসরায়েল সরকার হামাসকে অর্থ সহায়তা দিয়েছিল বলে অনেকক্ষেত্রে দাবি করা হয়। তবে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠায় কোনো ধরনের ভূমিকার কথা বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে সংশ্লিষ্টরা।

 

ইসরায়েলকে অস্বীকার

পিএলও-র মতো হামাস ইসরায়েলের অস্তিত্বের অধিকারে বিশ্বাস করে না। তাদের প্রতীকে রয়েছে জেরুসালেমের ‘ডোম অব দ্য রক’। ইসরায়েল, গাজা ও পশ্চিম তীরকে একক ফিলিস্তিন রাষ্ট্র হিসেবে তারা বিবেচনা করে৷

 

শান্তি চুক্তি প্রত্যাখ্যান

১৯৯৩ সালে ইয়াসির আরাফাত অসলো চুক্তির অধীনে ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি স্থাপন করেন, যার মধ্য দিয়ে ১৯৮৭ সালে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর ও গাজায় শুরু হওয়া প্রথম ইন্তিফাদার অবসান হয়। হামাস এই শান্তি প্রক্রিয়া প্রত্যাখ্যান করে ইসরায়েলে হামলা অব্যাহত রাখে।

 

নির্বাচনে জয়

২০০৬ সালের গাজার সাধারণ নির্বাচনে হামাস পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। এরপর থেকে মাহমুদ আব্বাসের নেতৃত্বে ফাতাহ-এর অধীনে রয়েছে পশ্চিম তীর আর গাজার নিয়ন্ত্রণ হামাসের হাতে। ২০০৮-০৯, ২০১২ ও ২০১৪ সালে ইসরায়েলি সেনার সঙ্গে হামাসের তুমুল লড়াই চলে।

 

সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত

১৯৯৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র হামাসকে সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত করে। ২০০৩ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নও তাদেরকে সন্ত্রাসী তালিকায় রাখে।হামাস এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করছিল, তবে আদালত তাদের আবেদন বাতিল করেন। যুক্তরাজ্য, কানাডা, জাপান, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়াও হামাসকে সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত করেছে।

 

হামাসের সহযোগী

হামাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সহযোগী দেশ কাতার। দেশটির আমির শেখ হামাদ বিন খলিফা আল-থানি প্রথম রাষ্ট্রনেতা, যিনি ২০১২ সালে হামাস সরকারের সঙ্গে দেখা করেন। এখন পর্যন্ত দেশটি হামাসকে ১৮০ কোটি ডলার দিয়েছে। হামাসের প্রতি তুরস্কেরও সমর্থন রয়েছে। সংগঠনটির নেতা ইসমাইল হানিয়ের পক্ষে রাজনৈতিক অবস্থান রয়েছে রিসেপ তাইয়্যেপ এর্দোয়ানের৷ এছাড়াও বিভিন্ন উদ্যোগ ও ফাউন্ডেশনের সহযোগিতাও পায় তারা।

 

হামাসের রকেট উৎস

সবশেষ সংঘাতেও ইসরায়েলের উদ্দেশ্যে প্রতিদিন শতাধিক রকেট ছুঁড়েছে হামাস৷ দীর্ঘদিন হামাস রকেটের জন্য ইরানের উপর নির্ভরশীল ছিল৷ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সুদান ও মিশর হয়ে সেখান থেকে অস্ত্র চোরাচালান হতো৷ তবে বর্তমানে গাজাতেই হামাস রকেট বানাচ্ছে বলেও ধারণা করা হয়৷

সূত্র: ডিডব্লিউ

এসএমডব্লিউ