জার্মানিতে শুরু হয়েছে বহুল প্রতীক্ষিত নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। গত বছরের ডিসেম্বরে আস্থাভোটে হেরে যান জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস। এরপরই দেশটিতে আগামী নির্বাচনের ঘোষণা দেন তিনি।

এবারের নির্বাচনের আগে অর্থনৈতিক সংকট, সন্ত্রাসী হামলা এবং অভিবাসী বিষয়টি বেশ আলোচনায় ছিল।

রোববারের (২৩ ফেব্রুয়ারি) এ নির্বাচনের মাধ্যমে ৬৯ বছর বয়সী কনজারভেটিভ ও ক্রিষ্টান ডেমোক্রেটস (সিডিইউ) দলের নেতা ফ্রেদিচ মার্জের চ্যান্সেলর হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তিনি কথা দিয়েছেন, গত কয়েক বছরে জার্মানিতে যেসব সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে তার সব তিনি দূর করবেন। তবে তার দলকে অন্য কোনো দলের সঙ্গে জোট বেধে ক্ষমতায় আসতে হবে।

যদিও তার চ্যান্সেলর হওয়ার সম্ভাবনার চেয়ে এখন বেশি আলোচিত হচ্ছে ডানপন্থি অলটারনেটিভ ফর জার্মানি (এফএফডি) নামের দলটি।

কারণ মুসলিম বিদ্বেষী, অভিবাসী বিদ্বেষী এই দলটির এবার প্রধান বিরোধী দল হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তারা সাবেক চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের দলকেও পেছনে ফেলতে পারে।

জার্মানির ৫৯ দশমিক ২ মিলিয়ন মানুষ এবার ভোট দেওয়ার জন্য উপযুক্ত। তবে এরমধ্যে অন্তত ২০ শতাংশ ভোট দেওয়ার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেননি।

যেহেতু ডানপন্থিদের উত্থানের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে তাই এ নির্বাচনের ওপর ইউরোপ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখছে। জার্মানিতে ১৯৪৫ সালের পর নাৎসিদের পতনের পর ডানপন্থি রাজনীতিকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সেই শক্তির উত্থান দেশটিতে আবারও হচ্ছে। আর যুক্তরাষ্ট্র এতে সমর্থন দিচ্ছে।

ডানপন্থি এ দলটি টিকটকের মাধ্যমে তরুণ ভোটারদের মনযোগ আকর্ষণ করতে সমর্থ হয়েছে। তারা ভোটারদের বার্তা দিচ্ছে, তাদের যেন ভোট দেওয়া হয় এবং জার্মানিতে আবারও ডানপন্থি মনোভাব ফিরিয়ে আনা হয়।

এই দলটি চায় ইউরোপীয় ইউনিয়নকে সংস্কার করতে। কিন্তু যদি সংস্কার সম্ভব না হয় তাহলে এই সংস্থা থেকে তারা বেরিয়ে যাবে। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক যেসব কর্মকাণ্ড আছে, সেগুলো থেকেও সরে যেতে চায় তারা। ইউক্রেনের ওপর হামলা করার পর জার্মান সরকার রাশিয়ার সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করে। ডানপন্থি দলটি বলেছে, তারা ক্ষমতায় আসলে রাশিয়ার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়া হবে এবং রাশিয়া-জার্মানির মধ্যে যে গ্যাস লাইন আছে সেটি ঠিক করা হবে। তারা জার্মানিতে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরিরও পক্ষে।

এদিকে সারাদিন ভোটগ্রহণ শেষে সন্ধ্যার পর থেকে ভোটের ফলাফল আসা শুরু করতে পারে।

সূত্র: বিবিসি

এমটিআই