ফাইল ছবি

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হামলায় এক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও একজন। যুদ্ধবিরতি চুক্তি সত্ত্বেও ইসরায়েল প্রায় প্রতিদিনই গাজায় হামলা চালাচ্ছে এবং এতে ঘটছে হতাহতের ঘটনাও।

এছাড়া গাজা ভূখণ্ডে ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে আরও ৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর ফলে অবরুদ্ধ এই উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা প্রায় ৪৮ হাজার ৪৫০ জনে পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তির সর্বশেষ লঙ্ঘনে বৃহস্পতিবার গাজা সিটিতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় এক ফিলিস্তিনি নিহত এবং অপর একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, শুজাইয়া পাড়ার পূর্ব অংশে তাদের বাড়িতে যাওয়ার সময় একটি ইসরায়েলি ড্রোন বেসামরিক নাগরিকদের একটি দলকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে এবং এতেই ঘটে হতাহতের ঘটনা।

গাজায় গত ১৯ জানুয়ারি থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও, গাজার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ প্রায় প্রতিদিনই ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দ্বারা যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের খবর দিয়েছে।

এদিকে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্যকর্মী ও উদ্ধারকর্মীরা গাজার ধ্বংসস্তূপের নিচে থেকে আরও ৬ জনের লাশ উদ্ধার করেছেন। এর ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের গণহত্যামূলক যুদ্ধে নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা বেড়ে ৪৮ হাজার ৪৪৬ জনে পৌঁছেছে বলে বৃহস্পতিবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সাতজন আহত ফিলিস্তিনিকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে, যার ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি আক্রমণে আহতের মোট সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ১১ হাজার ৮৫২ জনে দাঁড়িয়েছে। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে থাকলেও উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।

প্রসঙ্গত, গাজায় গত ১৯ জানুয়ারি থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। তিন-পর্যায়ের এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যে বন্দি বিনিময় এবং স্থায়ী শান্তি, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহারের লক্ষ্যমাত্রাও রয়েছে।

মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব থাকা সত্ত্বেও ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছিল।

জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।

টিএম