ন্যাশলাল জিওগ্রাফির বিরল ছবি, ৭০ বছর আগে কেমন ছিল কাবা
১৯৫৩ সালে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের জুলাই মাসের ম্যাগাজিনে প্রকাশ করা হয়েছিল পবিত্র কাবা শরীফের বিরল কিছু ছবি। পবিত্র হজব্রত পালনে সেবার যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আব্দুল গফুর শেখ যুক্তরাষ্ট্র থেকে মক্কায় গিয়েছিলেন । সঙ্গে তুলেছিলেন একাধিক ছবি। এই ছবিগুলো দেখলে বোঝা যায় কতটা ‘সাধাসিধে’ ছিল ওই সময়কার কাবা চত্বর। মাত্র ৭০ বছরের ব্যবধানে অভাবনীয় পরিবর্তন এসেছে সেখানকার জায়গায়—
বিজ্ঞাপন
ওই সময় হজ করতে মক্কায় যেতে সমুদ্রপথের জাহাজ ছিল সবচেয়ে জনপ্রিয় বাহন। তখনও বিশ্বব্যাপী বিমানযাত্রা এতটা ছিল না।
বিজ্ঞাপন
যাদের সক্ষমতা ছিল তারা বিমানে করেও সৌদিতে যেতেন। বিশেষ করে আশপাশের দেশের মানুষ ছোট বিমানে করে আল্লাহর ঘর প্রদক্ষিণে যেতেন।
সৌদির এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যেতে তখনো বাস ব্যবহার করতেন হজযাত্রীরা। তবে ওই সময় তেমন আধুনিক বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস ছিল না।
সংরক্ষিত এলাকা, শুধুমাত্র মুসলিমদের প্রবেশ অনুমোদিত- এমন সাইনবোর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন এক ব্যক্তি। সৌদি আরবের মক্কা ও মদিনায় মুসলিম ছাড়া এখনো কেউ প্রবেশ করতে পারে না।
কাবার আশপাশে দেখা যাচ্ছে হোটেল ও বিভিন্ন বাড়ি। পরবর্তীতে আধুনিকায়নের জন্য এসব ঐতিহাসিক হোটেল ও বাড়ি সব ভেঙে ফেলা হয়। বর্তমানে এখানে রয়েছে সুউঁচু দালান।
তৎকালীন মক্কার একটি ব্যস্ত সড়ক। এখানে অটোমান সাম্রাজের আদলের একটি মিনারও দেখা যাচ্ছে।
কাবায় প্রবেশের একটি দরজা। ওই সময় মানুষের এত ভিড় থাকত না। এমনকি কাবায় প্রবেশের গেটেই বিভিন্ন পণ্য নিয়ে বসতেন ব্যবসায়ীরা।
উঁচুস্থান থেকে তোলা কাবার একটি ছবি। তখন আধুনিকতার কোনো ছোঁয়া এখানে লাগেনি। এছাড়া আশপাশ ছিল সম্পূর্ণ খোলামেলা।
কাবার ভেতর তখন যে কেউ প্রবেশ করতে পারতেন। কিন্তু এখন শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় প্রধান অথবা বিশেষ ব্যক্তিদের কাবার ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়।
কাবা তাওয়াফ করা তখন বেশ সহজ ছিল। মানুষের ঠাসাঠাসি বা ভিড় কোনো কিছুই তখন ছিল না। এছাড়া মানুষ খুব সহজেই কাবার কাছে যেতে পারতেন। কিন্তু বর্তমান সময়ে, বিশেষ করে হজের সময় কাবার কাছে ঘেঁষা বেশ কষ্টসাধ্য কাজ।
বিভিন্ন জিনিসপত্রের পসরা সাজিয়ে বসতেন ব্যবসায়ীরা। তারা নানারকম পণ্য বিক্রি করতেন হজ করতে আসা হজযাত্রীদের কাছে।
ওই সময় হজযাত্রীরা নিজেদের কোরবানি পশু নিজেরাই কিনতে পারতেন। তবে এখন আর এ সুযোগ পান না তারা। হজযাত্রীরা কোরবানির পশুর জন্য অর্থ প্রদান করেন এবং সেই অর্থ দিয়ে তাদের নামে পশু কোরবানি করে দেওয়া হয়।
ওই সময় হজযাত্রীরা কোরবানির জন্য কেনা পশুও নিজেদের সঙ্গে রাখতে পারতেন।
কোরবানিকৃত পশু পরিবহনে ব্যবহার করা হতো গাধা। এক ব্যক্তিকে কোরবানির পশুর মাংস নিয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে।
মিনায় নিজেদের রান্না নিজেরাই করতেন হজযাত্রীরা। এখন আর এ সুযোগ নেই। এখন যারা হজ করতে যান তাদের হোটেল থেকে সরাসরি খাবার সরবরাহ করা হয়।
নিজেদের উটের পাশেই নামাজ আদায় করছেন কয়েকজন মুসল্লি।
আরাফাতের পাহাড়ের ওপর ওঠেছেন হাজীরা। ওই সময় এখনকার মতো এতটা ভিড় থাকত না।
নিজের মাথা মুণ্ডন করছেন এক হজযাত্রী। তাকে সাহায্য করছেন আরেক ব্যক্তি।
সূর্যের প্রখরতা থেকে স্বস্তি পেতে কোমল পানীয় পান করছেন কিছু ব্যক্তি। এখন কাবা ও এর আশপাশের এলাকা পুরোপুরি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। মানুষ যেন গরমে কষ্ট না পান সেজন্য এখন সব ব্যবস্থাই রাখা হয়।
সূত্র: সিয়াসাত/ ছবি-ন্যাশনাল জিওগ্রাফি
এমটিআই