মার্কিন নাগরিক পরিচয়ে চাকরি, সেই অর্থ ব্যয় হতো কিমের পারমাণবিক অস্ত্রে
উত্তর কোরিয়ার এক হ্যাকার এবং কিম জং উনের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ‘রিকনিসান্স জেনারেল ব্যুরো’র সদস্য সং কুম হিউকের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ। একই সঙ্গে রাশিয়াভিত্তিক চার আইটি কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটির ট্রেজারি অফিস অব ফরেন অ্যাসেটস কন্ট্রোল।
অভিযোগ উঠেছে, এই ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে গোপনে অর্থায়ন করছে।
বিজ্ঞাপন
সিবিএস নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, সং কুম হিউক আন্ডারিয়েল নামে এক হ্যাকিং গ্রুপের সদস্য। তিনি উত্তর কোরীয় আইটি কর্মীদের ছদ্মবেশে আমেরিকান হিসেবে বিদেশি কোম্পানিগুলোতে নিয়োগ পাওয়ার জন্য ভুয়া পরিচয়পত্র তৈরি করে দিতেন।
মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের এক কর্মকর্তা বলছেন, মার্কিন নাগরিকদের নাম, সামাজিক নিরাপত্তা নম্বর, ঠিকানা ইত্যাদি তথ্য চুরি করে ভুয়া পরিচয় তৈরি করা হতো উত্তর কোরীয় নাগরিকদের জন্য। ২০২২ সাল থেকে এ কাজের সঙ্গে জড়িত সং কুম হিউক।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
কর্মকর্তারা আরও দাবি করছেন, উত্তর কোরিয়ার এই প্রকল্পে ‘হাজার হাজার দক্ষ আইটি কর্মী’ জড়িত। যাদের অধিকাংশই চীন ও রাশিয়ায় অবস্থান করে বিদেশি কোম্পানিতে চাকরি করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করছেন। যার একটি অংশ কিম জং উনের পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে ব্যয় হচ্ছে।
সিবিএস নিউজের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বছরের পর বছর ধরে দক্ষ আইটি কর্মীদের বিভিন্ন দেশে পাঠিয়ে আমেরিকান নাম ও পরিচয় ব্যবহার করে বিদেশি কোম্পানিতে চাকরি করতে উৎসাহিত করেছে উত্তর কোরিয়া। এই প্রকল্পে হাজার হাজার দক্ষ আইটি কর্মী জড়িত, যাদের অধিকাংশই চীন ও রাশিয়ায় অবস্থান করে সরাসরি উত্তর কোরিয়ার গণবিধ্বংসী অস্ত্র ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে অর্থায়ন করছে।
এই সাইবার গুপ্তচরবৃত্তি দমন ও মার্কিন নাগরিকদের ছদ্মবেশ ধারণের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ হিসেবে মার্কিন ট্রেজারি অফিস অব ফরেন অ্যাসেটস কন্ট্রোল চারটি রাশিয়াভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। যেগুলো উত্তর কোরিয়ার জন্য অর্থ সংগ্রহে সাহায্য করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া রাশিয়াভিত্তিক আসাত্রিয়ান আইটি ওয়ার্কার নেটওয়ার্ক-এর ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, যার প্রতিষ্ঠাতা গাইক আসাত্রিয়ান উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে ১০ বছরের চুক্তি করেছিলেন।
মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ আরও জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার এই কর্মীরা ব্যবসা, স্বাস্থ্য, ফিটনেস, সামাজিক নেটওয়ার্কিং, খেলা, বিনোদন এবং লাইফস্টাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্টসহ নানা খাতে কাজ করতেন। অনেকে ভার্চুয়াল মুদ্রা বিনিময় সম্পর্কিত কাজেও জড়িত ছিলেন, যার ফলে তারা সহজে অর্থ পাচার করে উত্তর কোরিয়ায় পাঠাতে পারতেন। এসব কর্মীরা নিজেদের অবস্থান গোপন করে ভুয়া অ্যাকাউন্ট, চুরি করা পরিচয় ও নকল কাগজপত্র ব্যবহার করে উন্নত দেশগুলোর কোম্পানিগুলোতে চাকরির জন্য আবেদন করতেন।
এমজে