ভারতজুড়ে আগাম বর্ষা, ত্বরান্বিত ফসল চাষ
সময়ের আগেই ভারতজুড়ে বর্ষা মৌসুম শুরু হয়েছে। দেশের দুই-তৃতীয়াংশ এলাকায় বর্ষা দেখা দিয়েছে জানিয়ে আজ সোমবার ভারতের আবহাওয়া দফতরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এতে ফসল চাষ ত্বরান্বিত হওয়ার অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
মধ্য ও উত্তর ভারতে আগেভাগে বর্ষার আগমনের ফলে কৃষকদের ধান, তুলা, সয়াবিন ও ডালের মতো গ্রীষ্মকালীন ফসলগুলোর বপনকে ত্বরান্বিত করতে সহায়তা করবে এবং এতে করে ফসলের ফলনও আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিজ্ঞাপন
ভারতের আবহাওয়া দফতরের ওই কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘পাঞ্জাবের অধিকাংশ এলাকা ইতোমধ্যে বর্ষার পানিতে ঢেকে গেছে। সাধারণত জুন মাসের শেষদিকে পাঞ্জাবে বর্ষার এমন পরিস্থিতি শুরু হয়। এবার হয়েছে আগাম।’
ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ কেরালাতেও গত ৩ জুন ঢুকে পড়েছে বর্ষার পানি। সাধারণত জুনের প্রথমদিকেই কেরালায় বর্ষা শুরু হয়। তবে এবার রাজ্যটিতে বর্ষার পানি ঢুকে পড়ার পর থেকে দ্রুত তার বিস্তার ঘটছে। দ্রুতই চারপাশে বাড়তে শুরু করেছে বর্ষার পানি।
বিজ্ঞাপন
আবহাওয়া দফতরের সমন্বিত তথ্য-উপাত্তে দেখা যাচ্ছে, বর্ষার মৌসুম শুরু হওয়ার পর স্বাভাবিকভাবে যতটা বৃষ্টি হওয়ার কথা দেশটিতে এবার তার চেয়ে ২৫ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। মূলত ভারতের মধ্যাঞ্চলে তুমুল বৃষ্টির কারণেই এবারের পরিস্থিতি হয়েছে এমন।
ভারতের ২ লাখ ৭০ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের বৃহৎ এক অর্থনীতির জন্য বর্ষা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কেননা দেশটিতে চাষাবাদের জন্য ৭০ শতাংশ পানি পাওয়া যায় এই বর্ষাকালে। এর বাইরে বাকি পানির সরবরাহ আসে জলাশয় আর ভুগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের মাধ্যমে।
বৈশ্বিক এক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করা মুম্বাইভিত্তিক একজন ব্যবসায়ী বলছেন, ‘দক্ষিণ ও পশ্চিমের রাজ্যগুলোয় ইতোমধ্যে গ্রীষ্মকালীন ফসল বোনা শুরু হয়েছে এবং চলতি সপ্তাহেই দেশের মধ্যাঞ্চলীয় আর উত্তরের রাজ্যগুলোতেও ফসল বোনা শুরু হবে।’
তিনি বলেন, ‘উচ্চমূল্যের কারণে কৃষকদের ধান ও তেল চাষে আগ্রহ বেশি। এ কারণে বেশিরভাগ এলাকায় বোনা হবে ধান ও সয়াবিন।’
ভারত বিশ্বের ধানের বৃহত্তম রফতানিকারক এবং পামওয়েল, সয়াবিন এবং সূর্যমুখী তেলের মতো ভোজ্যতেলের শীর্ষ আমদানিকারক।
ভারতে প্রায় অর্ধেক চাষের জমিতে সেচব্যবস্থা নেই এবং এজন্য জুন থেকে সেপ্টেম্বরের বৃষ্টির ওপর কৃষকরা নির্ভরশীল থাকেন। ভারতীয় অর্থনীতির ১৫ শতাংশ কৃষি। কিন্তু ১৩০ কোটি জনসংখ্যার দেশটির অর্ধেকের বেশি মানুষ জীবনধারণের জন্য কৃষির ওপর নির্ভরশীল।
এএস