ভারতে হুমকির পর ‘দুর্ঘটনায়’ সাংবাদিকের মৃত্যু
মদ চোরাকারবারিদের নিয়ে সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করে লিকার মাফিয়াদের কাছ থেকে হুমকি পাওয়ার পরই ভারতের উত্তরপ্রদেশের টেলিভিশন সাংবাদিক সুলভ শ্রীবাস্তবের মোটরসাইকেল ‘দুর্ঘটনায়’ মৃত্যু হওয়া নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে।
সুলভ কাজ করতেন এবিপি গঙ্গায়। তিনি লিকার মাফিয়া নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছিলেন। তারপরই পুলিশকে জানিয়েছিলেন, মাফিয়ারা তাকে হুমকি দিচ্ছে। তার জীবন ঝুঁকিতে আছে। এরপর গতকাল রোববার রাতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে তার।
বিজ্ঞাপন
পুলিশ সুপার সুরেন্দ্র দ্বিবেদী জানিয়েছেন, ‘গতকাল সুলভ কাজ শেষে রাত ১১টার দিকে বাড়ি ফিরছিলেন। একটা ইট ভাটার কাছে তিনি মোটরসাইকেল থেকে পড়ে যান। কয়েকজন শ্রমিক দেখতে পেয়ে তাকে ধরে তোলেন। তার ফোন থেকে শ্রমিকরা সুলভের বন্ধুদের ফোন করেন। অ্যাম্বুলেন্সও ডাকেন। পরে তাকে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।’
এসপি দ্বিবেদী আরও জানিয়েছেন, ‘মোটরসাইকেলে শ্রীবাস্তব একা ছিলেন। তার বাইকের সঙ্গে একটা ট্রাকের ধাক্কা লাগে। তাতেই তিনি পড়ে যান। পুলিশ বিষয়টি সব দিক থেকে তদন্ত করে দেখছে।’
বিজ্ঞাপন
তবে মৃত সাংবাদিকের ছবি থেকে দেখা যাচ্ছে, তিনি রাস্তায় শুয়ে আছেন। তার মুখ ক্ষতবিক্ষত। তার শার্ট খুলে গেছে। শার্টের বোতামও খোলা। প্যান্টও খোলা ও নামানো। মরদেহের এমন অবস্থা দেখে সন্দেহ তৈরি হয়েছে যে, তাকে হয়তো মাফিয়ারাও খুন করেছে।
পুলিশকে শ্রীবাস্তব জানিয়েছিলেন, তিনি মনে করছেন, মাফিয়ারা তাকে হত্যা করতে পারে। তার সেই চিঠিও অনেক সাংবাদিক সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে পোস্ট করেছেন।
শ্রীবাস্তব লিখেছিলেন, ‘লিকার মাফিয়া নিয়ে একটা রিপোর্ট গত ৯ জুন আমার চ্যানেলের নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত হয়। তারপরই আমি বাড়ি থেকে বের হলেই মনে হয়, কেউ আমাকে অনুসরণ করছে। আমার সূত্ররা আমাকে জানিয়েছে, লিকার মাফিয়ারা রিপোর্ট প্রকাশের পর খুবই ক্ষুব্ধ। ওরা আমার ক্ষতি করতে পারে। আমার পরিবারও খুবই উদ্বিগ্ন।’
স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা প্রেম প্রকাশ এবিপি নিউজকে জানিয়েছেন, তিনি এই চিঠির বিষয়টি জানতেন। তিনি স্থানীয় পুলিশকে বলেছিলেন, শ্রীবাস্তবের বিপদের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে।
কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী টুইট করে বলেছেন, ‘লিকার মাফিয়ারা হত্যা করলো। অথচ সরকার চুপ। সাংবাদিকরা সত্য প্রকাশ করতে অস্বস্তিকর প্রশ্ন করছে। আর সরকার ঘুমাচ্ছে।’
সূত্র : ডয়েচে ভেলে
এএস