আগামী ৩১ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চীনে অনুষ্ঠিত হবে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) সম্মেলন। এতে ২০টি দেশের বিশ্বনেতারা অংশ নেবেন। এই সম্মেলনে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও উপস্থিত থাকবেন। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া নতুন বিশ্ব শাসন কেমন হবে— এ সম্মেলনের মাধ্যমে এমনটিই দেখানোর চেষ্টা করবেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।

মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সম্মেলনটি রাশিয়ার জন্য একটি কূটনৈতিক বিজয়। কারণ পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও চীন তাদের স্বাগত জানাচ্ছে।

অপরদিকে গত সাত বছরের মধ্যে প্রথমবার চীনে যাবেন মোদি। তার জন্য বৈঠকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ ২০২০ সালে সীমান্তে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের পর উভয়ই উত্তেজনা কমাতে চায়।

মোদি, পুতিন এবং শি জিনপিং সর্বশেষ একত্রিত হয়েছিলেন ব্রিকস সম্মেলনে।

চীনা গ্লোবাল সাউথ প্রজেক্টের এরিক ওলেন্ডার রয়টার্সকে সম্মেলন নিয়ে বলেছেন, “শি জিনপিং এ সম্মেলনের মাধ্যমে দেখানোর চেষ্টা করবেন আমেরিকার কর্তৃত্ববিহীন বিশ্ব কেমন দেখাবে। যুক্তরাষ্ট্র, বিশেষ করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো প্রেসিডেন্টদের অস্বস্তিতে রাখতেই ব্রিকসের মতো জোট গঠনা করা হয়েছে।”

চীনের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এটিই সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের সবচেয়ে বড় সম্মেলন হতে যাচ্ছে। সংস্থাটি প্রথমে ছয় সদস্য নিয়ে যাত্রা শুরু করে। এখন এটির সদস্য সংখ্যা ১০। অপরদিকে ১৬টি দেশ পর্যবেক্ষক হিসেবে এতে রয়েছে। নিরাপত্তাবিষয়ক সংস্থা হিসেবে যাত্রা শুরু হলেও এখন এটি অর্থনীতি ও সামরিক সহযোগিতার প্লাটফর্মে পরিণত হয়েছে।

তবে ভারতের বেঙ্গালুরুর তাকসাসিলা ইনস্টিটিউটের বিশ্লেষক মনোজ কেওয়ালরামানির মতে, এসসিও ‘গ্লোবাল সাউথের’ একতা প্রদর্শনের জন্য একটি ভালো সংস্থা। কিন্তু এটি সত্যিকারের নিরাপত্তা সমস্যার সমাধান করতে পারেনি। এছাড়া সংস্থাটির প্রধান দুই সদস্য ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে এখনো অনেক বিষয় নিয়ে মতানৈক্য রয়েছে।

বিশেষ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে ভারতের আপত্তির কারণে সংস্থাটি কোনো যৌথ বিবৃতি দিতে পারেনি। গত এপ্রিলের জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগাম হামলার নিন্দা না জানানোয় যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেনি নয়াদিল্লি।

কিন্তু এ সম্মেলনের ফাঁকে শি জিনপিং এবং মোদির মধ্যে ইতিবাচক বৈঠক হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা এ দুই নেতা সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহার, সহজ বাণিজ্য এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে পারেন।

চীনা গ্লোবাল সাউথ প্রজেক্টের এরিক ওলেন্ডার অবশ্য এ সম্মেলনকে একটি ‘শক্তিশালী চশমা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। কারণ এটি সত্যিকার অর্থে কার্যকর হওয়ার চেয়ে একটি প্রতীকি প্রদর্শন হবে।

এদিকে সম্মেলনে শেষেই দেশে ফিরে আসবেন নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু থেকে যাবেন পুতিন। তিনি বেইজিংয়ে চীনা সেনাবাহিনীর একটি প্যারেডে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

সূত্র: রয়টার্স

এমটিআই