বয়স যে কেবল একটি সংখ্যা মাত্র, তা আবারও প্রমাণ করলেন জাপানের ১০২ বছর বয়সী কোকিচি আকুজাওয়া। বয়স একশো পেরিয়েছে অনেক আগেই। হৃদযন্ত্রও দুর্বল। তবু পাহাড় ডাকার টান অগ্রাহ্য করতে পারেননি কোকিচি আকুজাওয়া। অবশেষে ১০২ বছর বয়সে জীবন্ত আগ্নেয়গিরি মাউন্ট ফুজির চূড়ায় উঠে প্রমাণ করলেন— বয়স কেবল একটি সংখ্যা। তার এই অসাধারণ কীর্তিকে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস স্বীকৃতি দিয়েছে। মাউন্ট ফুজির শিখরে আরোহণ করে বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন তিনি।

বয়সের শতক পেরিয়ে হৃদযন্ত্রের দুর্বলতা থাকা সত্ত্বেও কোকিচি তার পাহাড়ে ওঠার নেশা ছাড়েননি। ৩৭৭৬ মিটার উচ্চতার মাউন্ট ফুজি জয় করে ফিরলেও কোকিচি একেবারেই নির্লিপ্ত। তিনি বললেন, এর আগেও তো কয়েকবার উঠেছি। শেষবার উঠেছিলাম ৯৬ বছর বয়সে।

১৯২৩ সালে জন্ম নেওয়া কোকিচি পেশায় গবাদিপশুর খামারি। পাশাপাশি বৃদ্ধাশ্রমে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেন এবং ছবি আঁকা শেখান। দীর্ঘদিন ধরেই পর্বতারোহণ তার নেশা।

এবারের ফুজি জয় সহজ ছিল না কোকির। চলতি বছরের জানুয়ারিতে স্থানীয় পাহাড়ে উঠতে গিয়ে পড়ে গিয়ে তিনি হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। তখন পরিবার দারুণ চিন্তিত হয়ে পড়ে। কিন্তু প্রবল ইচ্ছাশক্তির জোরে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন কোকিচি। তার মেয়ে ইউকিকো (৭৫) বলেন, ডাক্তাররাও বিশ্বাস করতে পারেননি তিনি এত দ্রুত সেরে উঠবেন।

সুস্থ হওয়ার পর প্রতিদিন ভোরে এক ঘণ্টা হাঁটতেন কোকিচি। প্রায় প্রতি সপ্তাহেই ছোট পাহাড়ে চড়তেন। অবশেষে তিন দিনে ফুজি জয় করেন তিনি। পথে দু’ রাত কাটিয়েছেন কুঁড়েঘরে। উচ্চতার কারণে কিছুটা শারীরিক সমস্যা হলেও সহযাত্রীদের সহযোগিতায় পৌঁছে যান শীর্ষে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন নাতনি ও ব্যক্তিগত নার্সও।

কোকিচি আকুজাওয়ার এই অর্জন প্রমাণ করে, মনের জোর থাকলে যেকোনো প্রতিকূলতা পেরিয়ে অসম্ভবকে সম্ভব করা যায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত অনুশীলন, ইতিবাচক মানসিকতা আর প্রবল ইচ্ছাশক্তিই কোকিচিকে সম্ভব করেছে অসম্ভবকে জয় করতে।

এআইএস