ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে পানির তীব্র চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় পাকিস্তান তাদের একটি বাঁধ বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উড়িয়ে দেয়। গতকাল বুধবার (২৭ আগস্ট) ওই তীররক্ষা বাঁধটি উড়িয়ে দেওয়ায় পর বন্যার পানি শিখদের পবিত্র ধর্মীয় স্থান কর্তারপুর সাহিব তলিয়ে যায়।

পানির চাপ অত্যধিক বৃদ্ধি পাওয়ায় পাঞ্জাব প্রদেশের চেনাব নদীর কাদিরাবাদ বাঁধের তীররক্ষা অংশে নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পাঞ্জাবের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার মুখপাত্র মাজহার হোসেন বলেছেন, ‘‘বাঁধের অবকাঠামো বাঁচাতে আমরা ডানপাশের তীররক্ষা বাঁধ ধ্বংস করে দিয়েছি; যাতে পানির চাপ কিছুটা কমে যায়।’’

এদিকে ভারতে প্রবল বর্ষণের কারণে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলের আন্তঃসীমান্ত তিন নদী চেনাব, রাভি ও সুতলেজ নদীতে অস্বাভাবিকভাবে বন্যার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। যে কারণে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশজুড়ে বন্যার উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকের বসবাস রয়েছে পাঞ্জাব প্রদেশে। বন্যায় ভয়াবহ পরিস্থিতির আশঙ্কায় চেনাব, রাভি ও সুতলেজ নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে লাখ লাখ মানুষ ও গবাদিপশু সরিয়ে নেওয়ার কাজে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

পাকিস্তান জানিয়েছে, ভারত বাঁধের জলকপাট খোলার আগে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে তাদের অগ্রিম নোটিশ দিয়েছিল। তবে ভারতীয় কর্মকর্তারা এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।

পাকিস্তানের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জরুরি সতর্কতা জারি করে চেনাব, রাভি ও সুতলেজ নদীর তীরবর্তী মানুষদের ‘‘অবিলম্বে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার’’ আহ্বান জানিয়েছে।

পাঞ্জাবের প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার প্রধান ইরফান আলি গতকাল বলেন, ‘‘আমি জনগণকে রাভি নদীর তীর ত্যাগ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছি। কারণ ১৯৮৮ সালের বন্যার  পর এবার পানির প্রবাহ সবচেয়ে বেশি।’’

তিনি বলেন, বন্যার পানির ঢল আজ রাত ও আগামীকাল সকালে লাহোর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। চলতি বর্ষায় পাকিস্তান ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশটিতে গত জুন মাস থেকে শুরু হওয়া টানা বর্ষণে ভূমিধস ও বন্যায় ইতোমধ্যে ৮০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

সূত্র: ডন নিউজ

এমটিআই