রাশিয়ার অর্থনীতি ধসিয়ে দেওয়ার হুমকি যুক্তরাষ্ট্রের
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট (ফাইল ছবি)
রাশিয়ার অর্থনীতি ধসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আর এ লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, রুশ তেল কিনতে থাকা দেশগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করা গেলে মস্কোকে আলোচনায় বসতে বাধ্য করা সম্ভব হবে। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
বিজ্ঞাপন
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, যদি ওয়াশিংটন ও ইউরোপ মিলে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে তাহলে রাশিয়ার অর্থনীতি ভেঙে পড়তে পারে বলে সতর্কতা দিয়ে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে চাপ বাড়াতে হলে ইউরোপীয় মিত্রদের এগিয়ে আসতে হবে এবং মস্কোর তেল কিনতে থাকা দেশগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে।
রোববার এনবিসি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বেসেন্ট বলেন, “এখন বিষয়টা দাঁড়িয়েছে — ইউক্রেনীয় সেনারা কতদিন টিকে থাকতে পারে আর রুশ অর্থনীতি কতদিন টিকে থাকতে পারে — সেই হিসেব-নিকেশের ওপর।”
বিজ্ঞাপন
তার মতে, নতুন করে নিষেধাজ্ঞা এবং রুশ তেল আমদানি করা দেশগুলোর ওপর দ্বিতীয় পর্যায়ের শুল্ক আরোপ করলে রাশিয়ার অর্থনীতি পুরোপুরি ভেঙে পড়বে এবং প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে আলোচনায় বসতে বাধ্য করা যাবে।
বেসেন্ট আরও বলেন, “আমরা রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়াতে প্রস্তুত, তবে আমাদের ইউরোপীয় অংশীদারদেরও এতে সঙ্গ দিতে হবে।”
এর আগে গত মাসে ট্রাম্প প্রশাসন রুশ তেল কেনা চালিয়ে যাওয়ায় ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা সবচেয়ে কঠোর শুল্কগুলোর একটি।
এদিকে বেসেন্টের মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টা আগে ইউক্রেন জানিয়েছিল, রাশিয়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে আগ্রাসন শুরু করার পর থেকে এবারই সবচেয়ে বড় বিমান হামলা চালিয়েছে। রাতভর চলা হামলায় অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন এবং কিয়েভে একটি সরকারি ভবনে আগুন লেগে যায়।
রোববার ইউক্রেনে নিযুক্ত মার্কিন বিশেষ দূত কিথ কেলগ এ হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, মস্কো যুদ্ধ বন্ধের বদলে সবচেয়ে বড় আক্রমণ চালিয়ে কিয়েভের মন্ত্রিসভার দপ্তরে আঘাত হেনেছে। তিনি আরও বলেন, “এই হামলা দেখিয়ে দিয়েছে, রাশিয়া যুদ্ধ শেষ করতে কূটনৈতিক পথে এগোতে চাইছে না।”
এদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও রোববার রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও কঠোর অবস্থানের ইঙ্গিত দিয়েছেন। হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “হ্যাঁ, আমি প্রস্তুত,” তবে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাননি তিনি।
ট্রাম্প একাধিকবার রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়ানোর হুমকিও দিয়েছেন, তবে নির্দিষ্ট পদক্ষেপের ঘোষণা থেকে বিরত থেকেছেন সবসময়ই। যদিও তিনি দ্রুত যুদ্ধ শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছেন, বাস্তবে তা বাস্তবায়ন করতে কার্যত হিমশিম খাচ্ছেন।
এমন অবস্থায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার সঙ্গে এখনো ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া দেশগুলোর ওপর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন।
এবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি সব অংশীদারদের প্রতি কৃতজ্ঞ, তবে কেউ কেউ এখনো রুশ তেল ও গ্যাস কিনছে, যা ন্যায়সঙ্গত নয়। আমি মনে করি, এসব দেশের ওপর শুল্ক বসানোই সঠিক পদক্ষেপ।”
টিএম