নেপালে গত ৯ সেপ্টেম্বর রাতে হাওয়ায় নানা রকম গুজব উড়েছিল। সাংবাদিকদের ফোন সমানে বেজে চলেছিল। রাজতন্ত্র ফিরে আসতে পারে, এরকম একটা জল্পনাও শোনা যাচ্ছিল। গুজব ছড়াচ্ছিল সামাজিক মাধ্যমেও। প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাউডেল পদত্যাগ করেছেন বলে ব্রেকিং নিউজ চালিয়ে দিয়েছিল ভারতীয় সংবাদমাধ্যম।

কাঠমান্ডুর সিনিয়র সাংবাদিক কিশোর নেপাল বলেন, মঙ্গলবার যখন কাঠমান্ডুর সব বড় সরকারি প্রতিষ্ঠানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, তখন মনে হচ্ছিল যে নেপাল বোধহয় আবারও রাজতন্ত্রের দিকে এগোচ্ছে।

তার দাবি, সেদিন সেনাপ্রধান প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাউডেলকে পদত্যাগ করতে বলেছিলেন। তবে অন্য কয়েকজন আবার বলছেন, সেনাপ্রধান ও প্রেসিডেন্ট যৌথভাবেই পরিস্থিতি সামলিয়েছেন।

কিশোর নেপালের কথায়, কাঠমান্ডুর রাজকীয় প্রাসাদ নারায়ণহিতিতে জ্ঞানেন্দ্র ফিরে আসার কথা শোনা যাচ্ছিল। প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্রকে সেনাবাহিনী ইস্তফা দিতে বলেছিল। কিন্তু প্রেসিডেন্ট বিচক্ষণতা দেখিয়েছিলেন সেদিন।

‌‌‘‘সেনাপ্রধান প্রেসিডেন্টকে বলেন, আপনি পদত্যাগ করে দিন, বাকিটা আমরা সামলিয়ে নেব। তখন প্রেসিডেন্ট বলেন, আমি পদত্যাগ করব না। আপনি বরং আমাকে খুন করে দিন, আর জেন জির আন্দোলনকারীদের ওপর হত্যার দায় চাপিয়ে দিন। এরপর আপনি যা করার করবেন।’’

প্রেসিডেন্ট আর সেনাপ্রধানের মধ্যে এই কথোপকথন কিশোর নেপাল কীভাবে জানতে পারলেন? বিবিসিকে তিনি জবাবে বলছিলেন, আমি এই খবরের সূত্রটা বলব না, কিন্তু এটুকু বলতে পারি যে প্রধানমন্ত্রী অলিও কিন্তু সেনাপ্রধানের কথামতোই ইস্তফা দিয়েছিলেন। আর ঠিক একইরকম চাপ ছিল প্রেসিডেন্টের ওপরও। যদি প্রেসিডেন্ট পদত্যাগ করে দিতেন, তাহলে নেপালে সেনাশাসন বা রাজতন্ত্রের দিকে ঘুরে যেত। রাষ্ট্রপতি সত্যিই হিম্মত দেখিয়েছেন।

অন্যদিকে কিশোর নেপালের ভাষ্যের সঙ্গে একমত নন নেপালের সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল বিনোজ বস্নেত। তার কথায়, আমার মতে সেনাপ্রধান আর প্রেসিডেন্ট একযোগে একটা সমাধানের পথ খুঁজে বার করেছেন। কঠিন পরিস্থিতি থেকে দেশকে উদ্ধার করার জন্য কখনও সখনও সেনাবাহিনীকে সামনে আসতেই হয়।

• সংকট এখনও কাটেনি

কনক মণি দীক্ষিত নেপালের পরিচিত সিনিয়র সাংবাদিক। দেশটির ক্ষমতাসীন মহলের সঙ্গে তার সম্পর্কও ভালো। রাজতন্ত্র নিয়ে তার মনেও বেশ কিছু আশংকা রয়েছে। দীক্ষিত বিবিসিকে বলছিলেন, গণতন্ত্রের প্রতিটা স্তম্ভই জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রাজকীয় প্রাসাদ নারায়ণহিতিতে কেউ হাত পর্যন্ত দেয়নি। জ্ঞানেন্দ্রর বাসভবনও সুরক্ষিত থেকেছে। এই পরিস্থিতিতে রাজতন্ত্র নিয়ে মনে তো একটা আশংকা তৈরি হচ্ছেই। তবে আমিও মনে করি যে এক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

কিশোর নেপাল বলছেন, এখনও পর্যন্ত যা যা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা একটা গভীর সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্যই করা হয়েছে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে সংকট থেকে মুক্তি পেয়েছে নেপাল। এই পরিস্থিতিতে দুটি বিকল্প ছিল, প্রেসিডেন্টকে হয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে একমত হতে হতো, অথবা সেনাবাহিনীকে প্রেসিডেন্টের মতামত মেনে নিতে হতো।

নেপালের পরিচিত রাজনৈতিক বিশ্লেষক সিকে লালও আন্দোলনের পরে প্রেসিডেন্টের ভূমিকা প্রশংসা করছিলেন। তার কথায়, প্রেসিডেন্টের ওপর প্রবল চাপ ছিল। সংসদ ভেঙে দিতে চাইছিলেন না প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র। তাই তিনি নিজে না করে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশ পাওয়ার পরে সংসদ ভেঙে দেন। প্রেসিডেন্ট চাননি যে সংসদ ভেঙে দেওয়ার দুর্নামটা তার ওপর এসে পড়ুক। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। এসব সত্ত্বেও আমি বলব, প্রেসিডেন্টের ইচ্ছা অনুসারে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

৮ ও ৯ সেপ্টেম্বরের আন্দোলনের একটি অংশের নেতৃত্ব দিয়েছেন রাকশা বম। নেপালের সেনাপ্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগদেল ৯ সেপ্টেম্বর রাতে জেন জির যে প্রতিনিধিদের আলোচনার জন্য ডেকেছিলেন, তাদের মধ্যে ছিলেন রাকশা বম-ও।

বিবিসিকে তিনি বলছিলেন, সেনাপ্রধানের সঙ্গে দেখা করার জন্য জেন জির দশজন প্রতিনিধিকে ডাকা হয়েছিল, যাদের মধ্যে আমিও ছিলাম। আমি সেখানে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছিলাম যে আপনার সঙ্গে আলোচনা করব না। কারণ আমরা বেসামরিক সরকার গড়তে চাই। তাই প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা করব আমরা। সেনাপ্রধান বলেন, আপনারা নিজেদের দাবি আমাকে বলুন, আমিই প্রেসিডেন্টের কাছে সেগুলো পৌঁছিয়ে দেব।

বম বলছিলেন, প্রেসিডেন্ট যদি বিচক্ষণতা আর সাহস না দেখাতেন, তাহলে নেপাল হয় সামরিক শাসন অথবা রাজতন্ত্রের হাতে চলে যেতে পারত। জেন জি আন্দোলনের সময়ে যা যা হয়েছে, সেসব ঘটনা কী চোখে দেখছেন তিনি। এমন প্রশ্নের জবাবে বম বলেন, সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করা তো আমার একেবারেই পছন্দ না। আসলে ৯ সেপ্টেম্বরের আন্দোলন হাইজ্যাক হয়ে গিয়েছিল।

নেপালের পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সঙ্গে জড়িত ইন্দিরা অধিকারীর সঙ্গে জেন জি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে লাগাতার সম্পর্ক ছিল আর তিনি আন্দোলনকারীদের পরামর্শও দিচ্ছিলেন। তিনিও স্বীকার করছিলেন, প্রেসিডেন্ট বিচক্ষণতা দেখিয়েছেন, না হলে নিয়ন্ত্রণ হাতের বাইরে চলে যেত।

• সেনাবাহিনীর ভূমিকা

ইন্দিরা অধিকারী বলেন, জেন জির সঙ্গে আলোচনার সময়ে সেনাপ্রধান রাজতন্ত্রের সমর্থক দুর্গা প্রসাই, রবি লামিছানের দল আরএসপি এবং রাজতন্ত্রের সমর্থক আরেকটি দল আরসিপিকেও ডেকে নিয়েছিলেন। এর পরই আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি যে আসলে কী হতে চলেছে!

‘‘আন্দোলন তো জেন জির ছিল কিন্তু সেনাবাহিনী রাজতন্ত্রের সমর্থকদেরও আলোচনায় কেন ডেকে নিল? আমি এই যুবক-যুবতীদের বলেছিলাম যে তোমাদের বিশেষ গুরুত্ব দেবে না তারা, তাই নিজেদের প্রতিনিধি পাঠাও। এর পরই সুশীলা কার্কির নামে সকলে একমত হল,’’ বলেন ইন্দিরা অধিকারী।

তার কথায়, সুশীলা কার্কিকে আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি হিসাবে তুলে ধরাটা একটা বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত ছিল এবং সেনাবাহিনীর মোকাবেলা করতে প্রেসিডেন্টের সহায়ক হয়ে উঠল এই সিদ্ধান্ত। আমার মনে হয় সুশীলা কার্কিকে প্রধানমন্ত্রী বানানোটা রাজতন্ত্রের সমর্থকদের কাছে একটা বড় ধাক্কা। প্রথমে তো আমাদের মনে হচ্ছিল যে নিয়ন্ত্রণটা আমাদের হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে। কিন্তু প্রেসিডেন্টই একটা সমাধানের পথ বের করলেন।

কিন্তু জেন জির ওপর কি তার বিশ্বাস আছে? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলছিলেন, দেখুন, যা হয়েছে, তাতে ঝুঁকি তো ছিলই। যে প্রজন্ম আন্দোলন করেছে, তারা রাজনীতি একটু কমই বোঝে। এই জেন জিরা বলে যে রাজনীতিকে তারা ঘৃণা করে। রাজনীতির সত্যিকারের অর্থ তারা জানে না। তারা এটাও জানে না যে নাগরিক অধিকারের জন্য রাজনীতি কতটা জরুরি। যাদের সিস্টেমের বিষয়ে জ্ঞান নেই, তারাই দ্রুত সমাধান চায়। জেন জি-রও এটা সমস্যা।

জেন জির আন্দোলন রাষ্ট্রের বড়সড় ক্ষয়ক্ষতি করেছে। কিন্তু ইন্দিরা অধিকারী মনে করেন, যারা আন্দোলনটা শুরু করেছিল, তাদের এসব ক্ষয়ক্ষতির জন্য দায়ী করা যায় না।

‘‘জেন জি-র একটা নির্দিষ্ট বয়সসীমা আছে। কোনও নীতিগত বিচারধারা মেনে চলা যুব সমাজ নয় তারা। তাদের মধ্যে অনেক ধরনের মানুষ আছেন। তাদের মধ্যে কেউ সিস্টেম মেনে চলে, কেউ আবার মানে না। এর বিপদটা হল যে তাদের নেতা কে বা তার চিন্তাধারা কী; এটাই তো আমরা জানি না,’’ বলেন ইন্দিরা অধিকারী।

তার কথায়, কে গণতন্ত্র চায়, কে রাজতন্ত্রের সমর্থক; আমরা এটাও জানি না। আমি নিজেই আশ্বস্ত হতে পারছি না, এ ধরনের সহিংসতা আবারও হবে না। হতে পারে জেন জিরা সংসদ আর সংবিধানকে এড়িয়ে চলার জিদ ধরে থাকল। কিন্তু সুশীলা কার্কি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ছিলেন, তিনি আইনটা ভাল করেই জানেন।

• বালেন শাহকে নিয়ে প্রশ্ন

আন্দোলনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গড়ার সময়ে কাঠমান্ডুর মেয়র বালেন শাহর প্রভাব স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বালেন শাহই সুশীলা কার্কির নাম প্রস্তাব করেছিলেন। সেনাবাহিনীর সঙ্গে আলোচনা এবং সংসদ ভেঙে দেওয়ার দাবিও তারই তোলা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক সিকে লাল বলেন, প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা করার পরিবর্তে বালেন শাহ সেনাবাহিনীর সঙ্গে আলোচনার কথা বলেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করার পরে বেসামরিক সরকার গঠনের দায়িত্ব সেনাপ্রধানের ওপর নয়, প্রেসিডেন্টের ওপর ছিল। কিন্তু বালেন শাহ প্রেসিডেন্টকে উপেক্ষা করলেন। এ থেকেই বোঝা যায়, পর্দার আড়ালে অন্য কোনও খেলা চলছিল।

তার কথায়, আসলে বালেন শাহ একটা মুখোশ, যার নিয়ন্ত্রকরা দেশের ভেতরে-বাইরে; দুই জায়গাতেই আছে। সুশীলা কার্কিও মার্কিন লবির কাছাকাছি থেকেছেন এবং এখন তিনি নিজেকে ভারতের কাছাকাছি বলে দেখাচ্ছেন। সুশীলা কার্কির ছবি আর বাস্তবতার মধ্যে খুব একটা মিল নেই।

যদি বালেন শাহ সুশীলাকে সমর্থন না করতেন তাহলে কি তার পক্ষে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হওয়া অসম্ভব ছিল? ইন্দিরা অধিকারী মনে করেন, সেটা অসম্ভব ছিল।

এখানেই প্রশ্ন ওঠে, বালেন শাহ কেন সুশীলা কার্কিকে কেন সমর্থন করলেন? ইন্দিরা অধিকারী বলেন, কাঠমান্ডুর মেয়র হিসাবে বালেন শাহ শহরের রাস্তা থেকে ঠেলা আর ছোটখাটো স্টলগুলি সরিয়ে দেওয়ার জন্য অভিযান চালাচ্ছিলেন। কিন্তু এটা নিয়ে প্রচুর বিতর্ক হয়। তখন সুশীলা কার্কি বালেন শাহকে সমর্থন করেছিলেন। সুশীলা বলেছিলেন, নেপালের প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলো বালেনকে কাজ করতে দিচ্ছে না।

আবার বিশ্লেষক সিকে লাল বলেন, নেপালের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিরোধিতা করেন বালেন শাহ। এখন সুশীলা কার্কি বালেনের সমর্থন পাচ্ছেন যে বিস্মিত হতে হচ্ছে। নেপালের মানুষ যদি মনে করেন, বালেন শাহ অলি বা প্রচণ্ডার বিকল্প হয়ে উঠবেন, তাহলে তাদের ভাবনা চিন্তা করার দরকার আছে।

তার কথায়, নেপালের সংকট তো এখন শুরু হল। নির্বাচনের ঘোষণা যদিও করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমার মনে হয় না যে সময়-মতো ভোট হতে পারবে। প্রথমে তো বড় রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতরে ভাঙাগড়া চলবে, বেশ কয়েকজন নতুন নেতাকে সামনে নিয়ে আসা হবে। যখন সিস্টেম এই ব্যাপারে আশ্বস্ত হবে যে নতুন নেতৃত্ব বাকিদের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে, ভোটটা তখন হবে।

• সুশীলা কার্কির প্রধানমন্ত্রী হওয়া নিয়ে যত প্রশ্ন

সুশীলা কার্কি নেপালের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী তো হয়েছেন, তবে এ নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্নও উঠছে। আসলে নেপালের সংবিধান অনুযায়ী প্রতিনিধি সভার সদস্য নন, এমন কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন না। নেপালের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিতে গেলে প্রতিনিধি সভার সদস্য হওয়া আবশ্যিক।

প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে সুশীলা সংসদ ভেঙে দেওয়ার পরামর্শ দেন। আর প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র তাতে সিলমোহর দেন। নেপালের সংবিধানে এই পদ্ধতিতে সংসদ ভেঙে দেওয়ার অনুমোদন নেই। মন্ত্রিসভার সুপারিশক্রমে প্রধানমন্ত্রী সংসদ ভাঙতে পারেন।

এক্ষেত্রে প্রতিনিধি সভার সদস্য নন, এমন ব্যক্তিরা সংসদ ভেঙেছেন এবং তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রীও করা হয়েছে এমন একজনকে, যিনি সংসদের সদস্য নন। নেপালের সাবেক নির্বাচন কমিশনার নীলকণ্ঠ উপ্রেতি বিবিসিকে বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পুরো প্রক্রিয়াটাই অসাংবিধানিক। কিন্তু সমাধানের কোনও সাংবিধানিক উপায়ও ছিল না। নেপাল বার অ্যাসোসিয়েশনও সংসদ ভেঙে দেওয়াকে অসাংবিধানিক বলে মন্তব্য করেছে।

নেপালের তিনটি বড় রাজনৈতিক দল; নেপালি কংগ্রেস, কেপি অলির নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি (একীভূত মার্কসবাদী-লেনিনবাদী) এবং পুষ্প কমল দহল প্রচণ্ডর নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী কেন্দ্র) সংসদ ভেঙে দেওয়া ও সুশীলা কার্কিকে প্রধানমন্ত্রীর পদে বসানোর সিদ্ধান্তকে অসাংবিধানিক বলে মন্তব্য করেছে।

সুশীলা ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী বছর ৫ মার্চ নির্বাচন হবে। কিন্তু নির্বাচনের দিন নিয়ে অনেকেই এখনও আশ্বস্ত হতে পারছেন না। বলা হচ্ছে, নেপালের বর্তমান পরিস্থিতিতে ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব নয়। এ ছাড়াও সদ্য পতন হওয়া সরকারের মেয়াদ আরও দু বছর রয়েছে। এই অবস্থায় দুই বছর আগেই নির্বাচনী লড়াইতে নামা রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষে বেশ কঠিন।

নেপালের সংবিধান বিশেষজ্ঞ বিপিন অধিকারী বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করতে গিয়ে সংবিধানকে পুরোপুরি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে এবং জনপ্রিয় আন্দোলনের চাপে সব কিছু করা হচ্ছে।

অধিকারী বিবিসিকে বলেন, অসাংবিধানিক সিদ্ধান্তগুলোই সাংবিধানিক রীতিতে পরিণত হচ্ছে। এটা আমাদের পক্ষে খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আমার মনে হয় যে প্রেসিডেন্টের কাছে খুব বেশি বিকল্প ছিল না, তাই বেসামরিক সরকার গঠনের জন্য কোনও একটা সমঝোতা তাকে করতে হয়েছে। কিন্তু আমার আশংকা হল সব কঠিন পরিস্থিতিতে সংবিধানকে পাশ কাটিয়ে যাওয়া একটা খারাপ প্রবণতা হয়ে দাঁড়াবে। সমাধানের পথ তো সংবিধানের মধ্যে থেকেই খুঁজতে হবে, তার বাইরে গিয়ে নয়।

এসএস