যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপে পড়ে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির চুক্তি করতে অনেকটা বাধ্য হচ্ছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওস। সংবাদমাধ্যমটি হোয়াইট হাউজের কর্মকর্তাদের বরাতে বলেছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হওয়ার দ্বারপ্রান্তে আছেন নেতানিয়াহু।

যা আজ সোমবারই ঘোষণা দিতে পারেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

এক্সিওস জানিয়েছে, নেতানিয়াহু এখন বেকায়দায় আছেন। হয় তাকে যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে রাজি হতে হবে। নয়ত ট্রাম্পের সঙ্গে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্বে জড়াতে হবে। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমবারের মতো নেতানিয়াহুর সঙ্গে দূরত্ব তৈরির ইঙ্গিত দিয়েছেন।

গতকাল এক্সিওসকে ট্রাম্প জানান, যুদ্ধবিরতি চুক্তির শেষ পর্যায়ে আছেন তারা এবং নেতানিয়াহু এই কার্যক্রমের সঙ্গে আছেন। তবে নেতানিয়াহু এখন পর্যন্ত যেসব বক্তব্য দিয়েছেন সেগুলো অস্পষ্ট ছিল।

গতকাল ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকোফ এবং তার জামাতা জের্ড ক্রুসনারের সঙ্গে নেতানিয়াহুর দুই ঘণ্টাব্যাপী আলোচনা হয়। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের মধ্যে সেসব বিষয় নিয়ে মতপার্থক্য ছিল সেগুলো ওই আলোচনার পর সংকীর্ণ হয়ে এসেছে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা। তারাও বলেছেন, আজ সোমবার ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিতে পারেন।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ট্রাম্পের ঘোষণার পর চুক্তির জন্য হামাসের অনুমোদনের প্রয়োজন হবে।

ট্রাম্পের এক উপদেষ্টা এক্সিওসকে বলেছেন, যদি নেতানিয়াহু চুক্তি গ্রহণ না করেন তাহলে যুদ্ধ অব্যাহত রাখার জন্য তাকে অভিযুক্ত করা হবে।

এছাড়া এবার যদি নেতানিয়াহু চুক্তি না করেন তাহলে তার ওপর ট্রাম্প চড়াও হতে পারেন। কারণ ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন বহুলাংশে হ্রাস পেয়েছে।

যুদ্ধবিরতির আলোচনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছেন, হোয়াইট হাউজের সবাই নেতানিয়াহুর ওপর বিরক্ত। তারা মনে করছেন, নেতানিয়াহু তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার বাঁচাতে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করছেন।

এছাড়া প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে তার কিছু উপদেষ্টা বলেছেন, যদি এবার তিনি যুদ্ধ বন্ধ করতে না পারেন তাহলে বিশ্বমঞ্চে তিনি তার গ্রহণযোগ্যতা হারাবেন। ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যে যা করতে চান তার সবই হাতছাড়া হতে পারে।

ট্রাম্পের এক উপদেষ্টা জানিয়েছেন, চলতি মাসে কাতারের রাজধানী দোহায় ইসরায়েলের হামলার পর হিসাব-নিকাশ বদলে গেছে। আরব দেশগুলো এখন একত্রিত হয়ে গেছে। তারা যুদ্ধ বন্ধ হতে একযোগে কাজ করছে।

আরবরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একত্রিত হবে— ট্রাম্পের দূত স্টিভ উইটকোফ এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এই সময়ের জন্যই অপেক্ষা করছিলেন বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

এ উপদেষ্টা বলেছেন, “নেতানিয়াহু যখন মিসাইলগুলো কাতারে ছুড়ল। তিনি গালফ আরব নেতাদের একত্রিত করে ফেললেন। তারা এখন এক। তারা এক সুরে কথা বলে। এটি ছিল প্রভাব পড়ার মতো একটি বিষয়। আরবরা এখন ঐক্যবদ্ধ। স্টিভ উইটকোফ আর মার্কো রুবিও হয়ত বলছে ‘আহা, এই সময়টা এসে গেছে’।”

সূত্র: এক্সিওস

এমটিআই